আমাদের কথা

by Vinnokatha

বহু বছরের অগনন মানুষের সূক্ষ্ম ভাবনা-চিন্তার ফসল এই আধুনিক বিশ্ব সভ্যতা। এ পৃথিবী বহু মানুষের। মানব সভ্যতার ক্রমোন্নতির উৎস লিপিবদ্ধ আছে আমাদের বিজ্ঞান,ইতিহাস , দর্শন,সাহিত্য, কলা, শিল্প ,সমাজ বিজ্ঞানের মত নানামুখী বিষয়ের মধ্যে। লক্ষ্য করা যায় অগ্রগামী জাতি-গোষ্ঠী বিজ্ঞানমনস্কতা ও প্রযুক্তির নিরন্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে জাতির ভবিষ্যতকে উন্নত করেছে। এটাই ছিল পশ্চিমী নবজাগরণের অভিমুখ।

উনিশ শতকে আমার দেশের নবজাগরণের লক্ষ্য ছিল– ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করে সামাজিক মুক্তি ঘটানো। কিন্তু ভারতবর্ষের মতো বহুত্ববাদী সমাজ ব্যবস্থায় সংস্কারকামী স্রোত আদিবাসী , সংখ্যালঘুদের  ছুঁতে ব্যর্থ হয়। আজও অবহেলিত সমাজ গোষ্ঠীর প্রতি জাতিভিত্তিক বর্ণবাদী শিক্ষিত সুবিধাভোগী শ্রেণীর সামাজিক দায়বদ্ধতার ভাবনা প্রায় অনুপস্থিত।  আদিবাসী, সংখ্যালঘু, নিম্নবর্গীয় মানুষের জীবনযাত্রা, অর্থনীতি, ধর্মনীতির, মতো সামাজিক গতিবিধির পুনঃ মূল্যায়ন এখন ভীষণ জরুরী।  

স্বাধীনতার শত বর্ষের মুখে আমাদের সুখ-দুঃখের, নানা ঘাত-প্রতিঘাতের অন্তহীন বয়ান তুলে ধরার জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকার সময় ফূরিয়েছে। এই বাংলায় প্রথম শ্রেণীর বুর্জোয়া গণমাধ্যমে লিখিত বুদ্ধিজীবীদের তাত্ত্বিক আলোচনা দিয়ে উপেক্ষিত মানুষের মুক্তি ঘটা সম্ভব নয়। এটি বাস্তব সত্য। এবার  ভদ্রবৃত্তের বাইরে থাকা অগনিত ভুক্তভোগী, ‘পিছিয়ে রাখা’ মানুষদের  মতামতকে সবার সামনে তুলে ধরতে আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগ।

 অবহেলার দীর্ঘ পথকে অগ্রাহ্য করে ও চেতনার নতুন পথকে সুপ্রশস্ত্র করে সমাজ দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেশের আর্থ- সামাজিক সংকট, সব ধরনের সম্পদের লুট, বিপন্ন পরিবেশ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরস্পরের মধ্যে অবিশ্বাস, মুসলমান ও দলিতদের বিরুদ্ধে  বিদ্বেষ, মব লিঞ্চিং,  ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা,  হিংসা-বৈরিতা, নারী-পুরুষ লিঙ্গ ভেদে অসাম্যের বিরুদ্ধে ও যুক্তিবাদী বিজ্ঞান মনস্কতার প্রসার  ঘটাতে, বুদ্ধির মুক্ত-চেতনাকে  মানব কল্যাণে কার্যকর করতে আমাদের এই পথ।