আমি মার্ক্সবাদী এবং আমি তৈরি করেছি
একটি মিষ্টি বাড়ী টাটা রড দিয়ে যে
টাটারা মিলিটারি দিয়ে ধ্বংস করেছিল
কলিঙ্গনগরের আদিবাসী গ্রামগুলো।
আমি মার্ক্সবাদী এবং
আমার বাড়ির ইটগুলো
টকটকে লাল, কচি হাতের রক্তে।
আমি মার্ক্সবাদী এবং
আমার ছেলেমেয়েরা ঘৃণা করে আমার মায়ের ভাষা
আর ঘৃণা করে
বাংলার ‘নিচু’ জমি ও খেত
চোখে কানাডা, টেক্সাস,
ব্রিস্টল, নিউইয়র্ক বা শিকাগোর শুদ্ধ বাতাসের স্বপ্ন মেখে।
আমি মার্ক্সবাদী
আমি কখনো গলা তুলিনি
আদিবাসী, মুসলমান, ও অচ্ছুতদের অধিকারের জন্য,
আমি শুধু ঢেলা কুড়িয়েছি
স্থিতাবস্থার পুরনো দেওয়াল
সযত্নে মেরামতের জন্য।
আমি মার্ক্সবাদী এবং আমি প্রত্যেক পথ খুঁজি
গুটিকয়েকের জন্য সংরক্ষিত সেই উঁচু পাহাড়ে উঠতে
আর আমার নিরাপদ শক্ত মই হলো শ্রেনী।
আমি মার্ক্সবাদী এবং আমার মেয়েরা জন্মদিন পালন করে
মল ঘুরে ঘুরে, শহরের সব থেকে নামী বারে বসে,
আর চাঁদে যাওয়ার অগ্রিম টিকিট কেটে।
আমি মার্ক্সবাদী এবং আমি পুজো করি
আমার গৃহ দেবদেবীদের সকালে সন্ধ্যায়
আর দৃঢ়ভাবে প্রার্থনা করি শ্রেণিহীন, নারী-পুরুষ সমানের দিনের।
আমি মার্ক্সবাদী এবং আমি আমার বন্ধুদের পাঠায়
আমার পরিচিতি জ্যোতিষদের কাছে
তাদের বিবর্ণ দিনগুলোতে সোনার প্রলেপ দিতে।
আমি মার্ক্সবাদী এবং নিশ্চিন্তে বসে থাকি
আমার জমানো শেয়ার আগলে, আর সন্ধ্যার মিছিলে
গলা ফাটায় অসাম্য, অন্যায় ও শ্রেণি বিভাজনের বিরুদ্ধে।
(কবিতাটি বঙ্গের মুসলমান – এ প্রকাশিত)