শঙ্খ ঘোষ প্রতিটি কবিতায় যেমন কষ্টকে দেখেছেন, তেমনি কষ্টের উৎস থেকেই কবিতার নির্মাণ করেছেন এবং পরিণতিতে স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছেন। তাঁর কবিতায় এই স্বপ্নাকাঙ্ক্ষারই অমরত্ব প্রাপ্তি। ছন্দের ভেতর অন্ধকার থাকলেও, কিংবা মূর্খ বড়ো, সামাজিক না হলেও, কিংবা শূন্যের ভেতর ঢেউয়ের উপস্থিতি উপলব্ধি করলেও জীবনের সংরাগে বারবার তা উচ্ছল হয়ে উঠেছে। বাস্তব পৃথিবীর হাহাকার, ক্লেশ, সংঘাত, বিবর্ণতা কবিকে অস্থির করলেও আত্মজ্ঞানের পরিধিতে কবি সমাহিত সংহত স্রষ্টা হিসেবেই বহুমুখী পর্যটনে তাকে ধারণ করেছেন । তাই কবিতার শিল্পনৈপুণ্যের সিদ্ধিতে কোনও ঘাটতি দেখা দেয়নি। আমাদের বাহ্যিক দৃষ্টি এবং অন্তর্দৃষ্টির আলোয় এক প্রসন্নতার ঘোর সৌজন্য এসে উপস্থিত হয়েছে।
কবি
-
-
ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য, আইন, অর্থনীতি, সমাজতত্ত্ব এমন কোন বিষয় নেই যে তাঁর সংগ্রহে নেই। শুরুর সময় থেকে সাজানো রয়েছে সকল গেজেটিয়ার, অ্যাটলাস ভলিউম, একাধিক বিষয়কেন্দ্রিক মানচিত্র (আমার সচক্ষে দেখা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষ তাঁর বাড়িতে আসতেন শুধুমাত্র মানচিত্র দেখবার জন্য, আমার ধারণা তাঁর সংগৃহীত মানচিত্রের নমুনাগুলি একত্রিত করে একটা গ্রন্থ রচনা সম্ভব) প্রভৃতি। তাঁর সংগ্রহের ছোট একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, তিনি এমন কিছু ঐতিহাসিক নথি আমাকে দেখিয়েছিলেন, যেগুলি প্রায় জীর্ণ। ব্রিটিশ আমলে ইতিহাসসাক্ষ্য ঐতিহাসিক ব্যক্তির সই ও স্ট্যাম্পসহ বিভিন্ন নথি, যা আমাকে বাক্রুদ্ধ করেছিল।
-
শামসুর রাহমানের কবিতা পড়েই আমাদের বড় হওয়ার দিনগুলি স্মরণ করতে পারি। আমাদের হৃদয়ে যে আগুন ছিল তা জ্বলে উঠবার প্রয়াস পেয়েছিল শামসুর রাহমানের কবিতায়। মূলত তাঁর কবিতা পড়েই নিজেকে অনুভব করতে পারতাম, আমিও বাঙালি, আমার প্রাণের ভাষাও বাংলা। ভাষার জন্য আমিও শহিদ হতে পারি। আবার অন্যদিকে কতখানি মানুষ হলে মানুষকে ভালোবাসা যায় সেই শিক্ষাও পেয়েছিলাম তাঁর কবিতায়। ধর্মীয় অন্ধকার দূর করে, ভণ্ডামির গ্রাস থেকে আত্মচেতনাকে চিরন্তন সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে মানবিক চেতনায় কীভাবে পর্যবসিত করা যায় সেই নির্দেশও ছিল তাঁর কবিতায়।