জাত পাতের বিষয়টিকে তিনি শুধু একাডেমিক স্তরেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। এর বাস্তবিক অভিঘাতগুলো আমাদের সমাজকে কিভাবে পেছনে টেনে রেখেছে তার ভুরি ভুরি উদাহরণ তথ্য সহকারে দিয়েছেন। খুব ভালো লাগে যখন তিনি সংরক্ষণ নিয়ে নানা আপত্তিগুলোকে যুক্তি নির্ভর “অন্য কথা” দিয়ে একের পর এক সাজিয়েছেন।
আদিবাসী
-
-
আমি মার্ক্সবাদী
আমি কখনো গলা তুলিনি
আদিবাসী, মুসলমান, ও অচ্ছুতদের অধিকারের জন্য,
আমি শুধু ঢেলা কুড়িয়েছি
স্থিতাবস্থার পুরনো দেওয়াল
সযত্নে মেরামতের জন্য। -
দেখিনি দু’বার চালসার সেই অপূর্ব দৃশ্য
যেখানে এক আদিবাসী মায়ের
মাসখানেকের শিশু, এক হাটে,
দুগ্ধ পান করার জন্য উন্মত্ত,
আর কালো নির্জীব মা
শণিত চোখে
হাজার ভ্রমণ পিপাসুর ক্ষুধা মেটায়
অবলীলায় বোতাম খুলে দিয়ে, -
অত্যাচারে জর্জরিত মুন্ডা সমাজে বিরসা হয়ে উঠেছিলেন ত্রাতাস্বরূপ- তাঁর সংগ্রাম মুণ্ডাদের ঠিক কতখানি ঐহিক মুক্তি বা সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিল সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা এই যে, বিরসা হয়ে উঠেছিলেন মুগ্ধ আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মানের প্রতীক। অপমান, উৎপীড়নের বিরুদ্ধে মুন্ডারা যে রুখে দাঁড়াতে পারে, সেই বোধে-বিশ্বাষে বিরসার ঈশ্বরতা- সেই ঐশ্বর্যে বিরসার অনন্যতা, অমরত্ব।
-
‘বন্য জীবন করিডর’, ‘হাতি করিডর’, ‘বাঘ করিডর’ এবং হয়তো আরো অনেক করিডর ছড়িয়ে পড়বে মধ্য ভারতের অরণ্য অধ্যুষিত জেলায় জেলায়। এই ধরনের রোমান্টিক পরিবেশগত উদ্যোগের বিপর্যয়কর পরিণতির ফলে হাজার হাজার আদিবাসী গ্রাম থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন। আগেও যেমন হয়েছে, এখনও তাই। যদি শত শত গ্রামকে তাদের বহু কালের বনভূমি ও চাষবাসের জমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে তারা যাবে কোথায়?
এসব বিষয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে আশ্চর্যজনক নীরবতা রয়েছে।
-
স্বামীর মৃত্যুর জন্য আমরাও দায়ী। কারণ আমরা প্রশ্ন করাকে এড়িয়ে গিয়েছি অথবা আমরা যথেষ্ট প্রশ্ন করিনি , তুলিনি সঠিক আওয়াজ যতটা তুললে এই হত্যা গুলো বন্ধ হতে পারত। ফাদার স্ট্যান স্বামী রাঁচির একটি মিশনারী আবাসিক স্কুলের প্রধান ছিলেন। সম্ভবত সেই প্রথম খ্রীস্টান মিশনারী যেখানে প্রতিস্থাপিত হয়েছিল যীশু নয়, বীরসা মুন্ডার মূর্তি । কিন্তু বীরসার লড়াইয়ের ইতিহাস তো রাষ্ট্র আমাদের ভোলাতে চায়। রাষ্ট্র তো মুছে দিতে চায় আদিবাসী জনজাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি, সমাজকে। তাহলে স্ট্যান স্বামীর এই কাজ রাষ্ট্রের পছন্দ হবে কেন?