তদন্ত শুরু করলে জানা যায় এই পদ্ধতিতে খুন অতীতেও হয়েছে এবং যারা খুন হয়েছেন তারা কোনো না কোনো ভাবে নম্রতার স্লিমিং সেন্টারের সাথে যুক্ত।এই থ্রিলারটিতে সকল চরিত্রেরই জীবনের ঘটনাগুলিকে পৃথকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় মনে হয় যে তারা একে অপরের সাথে জড়িত।
বইকথা
-
-
এরপর যে বিষয়টা আলোচনার দাবীদার তা হলো, গল্পের কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রের মাঝে রসায়ন তৈরীর বিষয়টা। গল্পের প্রধাণ দুই চরিত্রের একজন ইউরোপীয় এবং একজন এশিয়ান।এই দুয়ের ভেতর চমক সৃষ্টি করা হয়েছে অত্যন্ত আদরে আর যত্নে। সীমানা পার করে নিয়ে ভিন্ন দুই জাতীয়তার মাঝে যে এক নিটোল অনুভূতির গল্প লেখক তার কলমে ফুটিয়ে তুলেছেন সেটি বাস্তবিকই হৃদয় ছুঁয়েছে প্রবল ভাবে৷ বিশেষ করে অ্যারেনের লাজুক ব্যক্তিত্ব এবং ঊষার চঞ্চলতা এই দুই ভিন্ন স্বভাবের মধ্যে লেখক এক অনন্য আবেগ স্পর্শ তার কলমে ছুঁয়ে দিয়েছেন একদম রঙতুলির মতোই।
-
তিনি প্রকৃত ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক। জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা, কুসংস্কার দূরিকরণে সারা জীবন তিনি অন্তহীন প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। জাতিভেদ প্রথা হলো এমন একটি সমস্যা যার অভিশাপ থেকে আজও ভারতবর্ষ মুক্ত নয়। জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা একটি জাতির প্রগতির পথে বড় বাধা, বড় অন্তরায়। আমরা এই একবিংশ শতাব্দিতেও পারিনি এসবের উর্ধ্বে উঠতে, পারিনি কুসংস্কার ও হিংসা মুক্ত উচ্চ মননশীলনের অধিকারী হতে।
-
হিন্দুত্ত্ববাদী ইতিহাসচর্চায় প্রাচীন ভারতের হিন্দু সংস্কৃতির উপর অধিক গুরুত্ব দিয়ে, তার ভালো দিকগুলো দেখাতে সচেষ্ট হয়েছেন। কিন্তু প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক হত্যা, অন্ধবিশ্বাস, জাতিভেদ প্রথা, উচ্চবর্ণ দ্বারা নিম্নবর্ণের মানুষের উপর অত্যাচারের কথা বিন্দুমাত্র দেখানো হয়নি। সুতরাং সংঘ পরিবারের একপ্রকার বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এখানেই লেখক দেখিয়েছেন, প্রাচীন ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে সংঘ পরিবারের ইতিহাস পক্ষপাতদুষ্ট। এমন অনেক উদাহরণ লেখক তুলে ধরেছেন, যেটা প্রমাণ করে প্রাচীন সময় থেকেই ভারতের ঐতিহ্য ছিল সমন্বয় ও সম্প্রতির।
-
‘বহু প্রথিতযশা প্রাবন্ধিক ও মনস্বী ব্যক্তি সে কাজ [বিদ্যাসাগরের জীবনকথা লেখা] ইতিপূর্বে করেছেন। কোনো তাত্ত্বিক বিতর্কের জটিলতার মধ্যে না গিয়ে আমি সহজসরলভাবে এই ঋজু মানুষটির চরিত্রমহিমা বলার চেষ্টা করেছি…আজকের দিনের প্রতিনিয়ত স্খলন ও পতনের মধ্যে যখন ব্যক্তির মেরুদণ্ড ক্রমশই নানা আঘাতে ও প্রলোভনে বাঁকা হতে থাকে তখন এই বিদ্যাসাগরে চরিত্রের রত্নস্পর্শে মেরুদণ্ড সোজা করে চলবার শক্তি পাওয়া যায়।’
-
বইটিতে আছে মাটি ছুঁয়ে চলা গরিব মানুষের জীবনযাপনের গল্প যার কুশীলবরা আমাদের পরিবেশে লড়তে থাকা বাস্তব সমাজ জীবনের প্রতিনিধিস্বরূপ। কোভিড-১৯ এর কারনে নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টসাধ্য দিনযাপন, অস্তিত্বের লড়াই, অভিযোজন, গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে লেখকের একাত্মতা, চরিত্রগুলোর সরলতা পাঠককে সমাজ অনুধাবনে নতুন দৃষ্টি দেয়। কাহিনী বর্ণনায়, কথ্য ভাষার প্রয়োগে লেখকের সাবলীলতা লক্ষণীয়। প্রতিটি গল্পে মাটির গন্ধ, প্রাকৃতিক পরিবেশের আনন্দের সঙ্গে সহায়সম্বলহীন মানুষের দুঃখ-সুখের মেলবন্ধন তার লেখনিতে এক বিশিষ্টতা দান করেছে।
-
কিন্তু যে ঘটনাগুলি আমাদের জীবনের অন্তরালে অবস্থান করে, হৃদয়ে মোচড় দেয়, বেদনার স্পর্শে চোখ ভিজে যায়, মনকে ভারাক্রান্ত করে—সেইসব মনস্তাত্ত্বিক অতি সূক্ষ্ম ব্যাপারগুলিকে তিনি গল্প ও অণুগল্পে রূপায়িত করেছেন।
-
হাসান আজিজুল হক ‘কথাসাহিত্যের কথকতা’ বইতে লিখেছেন, “যারা কখনোই, কোনো কারণেই দেশত্যাগ করবে না, দেশত্যাগর কল্পনা পর্যন্ত যাদের মাথায় আসে নি, তাদের যখন হাজারে হাজারে, লাখে লাখে ভিটেমাটি থেকে উৎখাত হয়ে ছিন্নমূল উদ্বাস্তুতে পরিণত হতে হয়েছে—-আমাদের সেই সাম্প্রতিক ইতিহাসের সেই বৃহত্তম বেদনা ও যন্ত্রণার কথা কেউ লেখেন নি।”২ বস্তুনিষ্ঠ কথাকার দেশভাগজনিত এই গভীর সংকটকে তুলে ধরলেন তাঁর ‘আগুনপাখি’ নামক উপন্যাসে।
-
তথ্যানুসন্ধানী এই বই বাঙালির মননকে জাগিয়ে তুলে এক নতুন সকালের দিশা দেখাবে বলে বিশ্বাস, একে অপরের ধর্ম-সংস্কৃতি, সচেতনতা ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে দিতে এই বই এক অনন্য নিদর্শন হয়ে থাকবে বলে বিশ্বাস।জানুন নিজেকে, নিজের সমাজ, ধর্ম ও দেশকে।
-
মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসের উপর লেখা অন্যতম প্রামাণ্য এই বইয়ে তিনি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন তৎকালীন অর্থনীতি, শিল্পকলা, স্থাপত্য, প্রযুক্তি সম্পর্কে । তিনি মনে করতেন, বাঙালি জাতির নির্মাণ প্রক্রিয়ায় এই যুগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সমসাময়িক অন্ত্যজ শিল্পী কারিগর শ্রেণীর প্রকৃতি ও শেকড় অনুসন্ধানে তিনি ব্রতী হন।