মহাত্মা গান্ধী ১৮৯৩ সালে আইনজীবী হিসেবে সর্বপ্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পা রাখেন এবং ১৯১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর সেদেশে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন। অপরদিকে মওলানা ভাসানী ১৮৯৭ সাল থেকে (সৈয়দ আবুল মকসুদের মতে ১৯০৪ সাল থেকে) ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় পাঁচ দশক আসামের নিপিড়িত বাঙালিদের অধিকার রক্ষায় বিশেষভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেন। আসামের ‘লাইন প্রথা’ ও ‘বাঙ্গাল খেদা’ নামক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তিনি প্রায় একা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। দু’জনেই নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে বিদেশ বিভূঁইয়ের বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে রাজনৈতিক জীবনের গোড়াপত্তন করেন। কিন্তু শ্রেণিচেতনার বৈপরিত্য ও সাধারণ মানুষের জন্য অতি সাধারণ বেশ—ভুষা সম্পন্ন একজন মজলুম জননেতা বলে মওলানা ভাসানীর এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন ইতিহাসের প্রাণপ্রদিপের আলোয় স্থান পায় নাই। যেমনটি মওলানা ভাসানীর অনুরোধ সত্ত্বেও সেদিন মহাত্মা গান্ধী কিংবা জিন্নাহ সাহেবেরা আসামের নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ান নাই। উপমহাদেশের রাজনীতিতে সেই বৈপ্যরিত্ত্বের রাজনীতি এখন আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই গণমানুষের রাজনীতি আর ইতিহাসের প্রয়োজনেই মওলানা ভাসানী বারবার ফিরে আসে। যেখানে গণমানুষ ও মওলানা ভাসানীর আসাম জীবন একাকার।
প্রবন্ধ
-
-
গঙ্গারিডইরা যে ছিল মূলতঃ পৌন্ড্র জাতি সে বিষয়ে সব ঐতিহাসিকই একমত। এদের ভাষা ছিল পূর্ব-প্রাকৃত থেকে প্রাকৃত-অপভ্রংশ। আর এদের লিপি ছিল ব্রাহ্মী, খরোষ্টী ইত্যাদি লিপি থেকে সৃষ্ট প্রাক-বঙ্গলিপি। অনেকের মতে নিম্নবঙ্গে আরও কিছু লিপি হয়তো প্রচলিত ছিল, কিন্তু সে-সব লিপি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। আর তাই সুন্দরবন অঞ্চলে প্রাপ্ত কয়েকটি সীলমোহরের পাঠোদ্ধার আজও সম্ভব হয়নি। সাগরকূলের গঙ্গারিডইরা ছিল ব্রাহ্মণ্যপ্রভাবমুক্ত স্বাধীন জনগোষ্ঠী।
-
প্রবন্ধ
আর এস এস কি গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় আস্থা রাখে?
by Abu Siddikby Abu Siddikরাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ রাষ্ট্রের প্রতি সংখ্যালঘুদের পূর্ণ আনুগত্য দাবি করে।সংখ্যালঘুদের শুধুমাত্র ভারতীয় সংবিধান ও আইন ব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য থাকলেই হবে না। আর এস এসের শাখাগুলিতে যেভাবে প্রার্থনা ও প্রতিজ্ঞার পাঠ করানো হয় তা থেকেই স্পষ্ট হয় যে হিন্দুত্ব ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।এরকমভাবেই মুসলিম লিগও ইসলামের সঙ্গে জাতীয়তাবাদের ইস্যুটিকে একত্রিত করেছিল। খুব তাৎপর্যপূর্ণ কথা এই যে আর এস এসের প্রার্থনা ও শপথ পাঠের বক্তব্যগুলি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করে। আর আমরা সবাই স্বীকার করি ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মূল বৈশিষ্ট্য।এখানে একটি কথা খুব তাৎপর্যপূর্ণ। সংবিধান বিরোধী কাজের জন্য অন্য সব দলের সদস্য সদস্যাদের হয় জেলের ঘানি টানতে হচ্ছে আর না হয় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারাতে হচ্ছে, সেখানে আর এস এসের লোকেরা প্রকাশ্যে দেশের সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের দেশব্যাপি শাখার কাজকর্মও সমানতালে চলছে।
-
হিংসা, দ্বেষ এখন বিশ্ব তথা বাংলা তথা ভারতের ঘরে ঘরে। এবং এসব নিয়ে মানুষ খুব বেশি চিন্তিত নয়।হাতে হাতে ইন্টারনেট। বুকে বুকে হিংসা দ্বেষ। মুখে মুখে খিস্তি খেঁউড়। কথায় কথায় উগ্র গালিগালাজ।দিন শুরু হিংসাতে, শেষও হিংসাতে। যুদ্ধ, হত্যা, ধর্ষণ, ধ্বংস, দাঙ্গা, আক্রমণ, শরণার্থী—এসবের খবর সব গা-সওয়া। শাস্ত্র মুখে মুখে, রক্ত হাতে হাতে। ঘৃণা অন্তরে অন্তরে। বিষ আকাশে বাতাসে। মৃত্যু আকছার। বেঁচে থাকার লড়াই সহিংস, অতীব নিষ্ঠুর। এক ইঞ্চি জমির জন্য লড়াই, বাসে ট্রেনে একটি সিটের জন্য লড়াই, দশটা টাকার জন্য হাটেবাজারে লড়াই, লড়াই অফিসে, হাসপাতালের লাইনে লড়াই—লড়াই সর্বত্র। লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই।
-
আবদুল্লাহিল বাকি বিগত দুই দশকে যে সমসাময়িক নব্য প্রাচ্যবাদের আবির্ভাব ঘটেছে, তা সাধারণভাবে আরব ও ইসলামী সংস্কৃতি সম্পর্কে এক ধরনের…
-
ভারতের গণমাধ্যম গুলি আজ বিপন্ন, অধিকাংশ গণমাধ্যম হয় রাজনৈতিক ক্ষমতার কাছে অথবা অর্থের কাছে বিকিয়ে গেছে। এটা খুব দুর্ভাগ্যের এবং দুশ্চিন্তার। বিকৃত খবর পরিবেশনের ফলে জনমানসে বাড়ছে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ , হিংসা উস্কানি এবং এমনকি দাঙ্গার মতো ঘটনা। এক জায়গার ঘটা খবর অন্য জায়গার খবর বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে সর্বদা।
-
বিবিসির জনৈক উপস্থাপক বর্তমান বিশ্বের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিলাসবহুল নগরীর প্রতিষ্ঠাতা শেখ রাশিদ-আল- মাখতুমকে প্রশ্ন করেছিলেন,”দুবাই নগরীর ভবিষ্যৎ কী”? এই…
-
শিক্ষার সাথে জীবিকার সম্পর্ক বর্তমানে অত্যন্ত নিবিড়। তবে সভ্যতার অগ্রগতির লক্ষ্যে আজকের দুনিয়াতেও আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত এমন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি যা আমাদের মনকে সর্বপ্রকার সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করবে। মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধির সহায়ক হবে। মানবতার পরিপন্থী সকল দুঃখ দুর্দশা, শোষণ , নিপীড়ন থেকে সমাজকে মুক্ত করে প্রগতির পথকে প্রশস্ত করার প্রয়াস চালাবে।
-
প্রবন্ধ
প্রথম বিলেতযাত্রী এহতেশামউদ্দীনঃসমকালীন সমাজ রাজনীতি ও সংস্কৃতি
by আমিনুল ইসলামby আমিনুল ইসলামআঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধের এক দুর্যোগময় সময়ে বাংলার ভাগ্যাকাশে আবির্ভূত হন মির্জা শেখ এহতেশামউদ্দীন (১৭৩০-১৮০১) । বাংলায় নবাবি শাসনের অবসান ও…
-
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ( 12 রবিউল আওয়াল আরবি মাসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম ও ওফাত দিবস) বিপুল উৎসাহের সাথে ,জাঁকজমক ,ভক্তি ও মর্যাদার সঙ্গে দান ,সাদকা , কুরআন তিলাওয়াত , লঙ্গর ও খানাপিনার মহফিল ,বিভিন্ন রকমের খাবার ও মিষ্টান্ন তৈরি,জনকল্যাণমূলক কর্ম, নাত এ রসূল পাঠ ,কাসীদা, গজল , জলসা মহফিল ,জুলুসের জসনের মাধ্যমে মিলাদ মাহফিল উদযাপন করা হয়। আজও মিলাদুন্নবীর উৎসব পালন হয় সামাজিক ও সংস্কৃতির ঐক্যের জন্য ,ধর্মীয় সংস্কৃতির কারনে৷