জয় শ্রী রাম স্লোগানে ধর্মের কিছু নেই। নেই রামের প্রতি ভালবাসা। এটি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার যা প্রয়োগ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে গণতন্ত্রের খালি ধ্বজা উড়ানো যায়। ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের সব বিষ আগে এই স্লোগানে নিহিত না থাকলেও আজকের দিনে তা আর বিশ্বাস হয় না।এই স্লোগান ভক্তি উদ্রেক করে না। জন্ম দেয় ভীতির। রামের নামে।
মতামত
-
-
Bunch of Thoughts- এর ভারতে তিন শত্রুদের ‘হিংস্র চিন্তনে’ ধ্বংস করাই লক্ষ্য। নগ্ন ফ্যাসিজমের মাধ্যমে বড় মাপের গণহত্যা সংঘটিত না করে ছোট ছোট কিন্তু নিয়মিত হিংসা ও হত্যা করে রোজকার সাম্প্রদায়িকতার বাস্তবায়ণ ঘটানোয় এদের লক্ষ্য। এরা দেশদ্রোহী, টুকরে টুকরে গ্যাং, শহুরে নকশাল, আ্যন্টি-ন্যাশনাল, খান মার্কেট গ্যাং, সেকুলাররিস্ট ইত্যাদি নামে দেগে দিয়ে We or Our Nationhood বইয়ের ভাষায় হিন্দুস্তানে বসবাসকারী সকলকে হিন্দুত্বের সংস্কৃতি ও ভাষাকে গ্রহণ করে হিন্দুত্বের আদর্শকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে নিজেদের ভিন্ন জাতিসত্ত্বাকে ভুলে কোন রকম সুযোগ সুবিধা না চেয়ে, নাগরিকত্বের কোন দাবি না করে, হিন্দুরাষ্ট্রের দ্বারা কোনঠাসা হয়ে এই দেশে থেকে যেতে হবে।
-
কেন এত দূরে, কাদের সিদ্ধান্তে এবং ফয়সালায় আজ জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত। ক্লারিয়েটে বাজে অন্তহীন এক বেদনার সুর। তবে নিজ ভূমি থেকে নির্বাসিত অন্যরা এ অঞ্চলে বেশ আছে বলে জানায়। কেননা, দণ্ডকারণ্যের মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে সফল প্রকল্প। যেখানে মানুষ—প্রকৃতির বদান্যতায় একটু স্বস্তিতে ছিল। প্রজন্ম পরম্পরায় যাপিত জীবনে দুঃখের দহন কিছুটা প্রশমিত হলেও স্মৃতির দহন কী আমৃত্যু ফুরোয়? ভারতের বিভক্তিকরণ শুধু একটি সাংবিধানিক দেশবিভক্তিতেই নিষ্পত্তি হয়নি, বরং বহু ক্ষেত্রেই তা ছিল অসংখ্য ঘরগেরস্তালি, পরিবার ও মানুষের জীবনের মর্মান্তিক ব্যবচ্ছেদ। ইতিহাসবিদ জ্ঞান পাণ্ডের মন্তব্য, “ভারতীয় ইতিহাসচর্চায় দেশ বিভক্তির অবস্থান স্ববিরোধী।”
-
পুজোআর্চা ব্যাপারটা মানুষের অন্যতম মুখ্য সংস্কার মাত্র। বেদের কোথাও নেই পুজো প্রসঙ্গটি। বেদে ‘সূর্য’ ছাড়া অন্য কোনও দেবদেবীর নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না।এই যে দুর্গাপুজো ইত্যাদি, যা নিয়ে যৎসামান্য আলোচনা হল, এ-সব সমগ্র বেদের কোনও পৃষ্ঠাতেই নেই। সবটাই পুরাণ মতে। পুরাণই সাধারণ মানুষ মেনে চলছেন, পুজো চলছে বছরভর যথারীতি।
-
মিডিয়ার প্রচণ্ড চাপে অবশেষে বিপ্রতীপ নিজের প্রাসাদোপম বাড়িতেই প্রেস কনফারেন্স ডাকলেন। সেখানেই ফাঁস করলেন রহস্যটা। বললেন, ছবিঘর আর্ট গ্যালারির প্রদর্শনীতে তাঁর ‘Raining’ সিরিজের সবকটা ছবিই উল্টো করে টাঙানো হয়েছিল। সমালোচকরা তাই নিয়েই বোকার মতো লাফালাফি করায় তিনি যারপরনাই বিরক্ত। এর জেরেই ফিরিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।
-
‘বন্য জীবন করিডর’, ‘হাতি করিডর’, ‘বাঘ করিডর’ এবং হয়তো আরো অনেক করিডর ছড়িয়ে পড়বে মধ্য ভারতের অরণ্য অধ্যুষিত জেলায় জেলায়। এই ধরনের রোমান্টিক পরিবেশগত উদ্যোগের বিপর্যয়কর পরিণতির ফলে হাজার হাজার আদিবাসী গ্রাম থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন। আগেও যেমন হয়েছে, এখনও তাই। যদি শত শত গ্রামকে তাদের বহু কালের বনভূমি ও চাষবাসের জমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে তারা যাবে কোথায়?
এসব বিষয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে আশ্চর্যজনক নীরবতা রয়েছে।
-
কার্বন-ডাই-অক্সাইডরূপ দূষণ দৈত্যের হাত থেকে বাঁচার উপায় কী? বিজ্ঞানীরা বর্তমান সময়ে একটি নতুন কথা শুনিয়েছেন। এটিকে যদি বাতাসে বের হবার আগেই পাতাল বন্দি করা হয়? তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কিছুটা।
-
আধুনিক রাজা-রানিরাও কবি ভারভারা রাও, সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নওলাখা, স্ট্যান্ স্বামী,ডাক্তার কাফিল খান, সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান, মোঃ জুবায়ের, ছত্রধর মাহাতোদের ‘রক্ষা’ করতে জেলখানাতেই রাখেন! এই কাজে তাদের সহায়ক হয় ১৮৭০ সালের রাজদ্রোহ আইন, ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের কার্বনকপি ইউএপিএ এবং ইউএপিএ – ২, আফস্পা ইত্যাদি। এমনকি রবি ঠাকুরের রাজ্যেও এখন বিদ্বেষবাদীদের অভিযোগক্রমে সুপরিচিত সম্প্রীতি-সাধকের ‘নিরাপত্তার জন্যই’ রাতভর থানায় আটক রেখে পরের দিন জামিন অযোগ্য ধারায় কোর্টে তোলা হচ্ছে! সেই পুলিশ-কেস কবে শেষ হবে তা কেউই জানেন না!
-
গত পঞ্চাশ বছরে সরকারি চাকুরি ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবস্থা তথৈবচ। তাঁরা প্রদীপের নিচে জমাট অন্ধকারে আছে। এই অভিযোগ নির্দিষ্ট কোনো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়। কম বেশি সব সরকারই দায়িত্ব এড়াতে পারে না “তোষণ” শব্দটি মুসলমানদের ক্ষেত্রে সবৈব মিথ্যে। অথচ, তোষণ আজ বিভাজনের রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে ,তোষণ যদি সত্যি কোনো সরকার করত তবে মুসলমানদের উন্নতি হতো।আসলে ওসব কাগুজে বক্তৃতা। তাছাড়া, সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেই বরাদ্দকৃত অর্থ কোনদিনই খরচ তো হয় না ,বরং দুর্নীতিবাজদের পকেটস্থ করার ব্যবস্থা হয় ।এই “তোষণের” অপপ্রচারের দ্বারা সংখ্যাগুরু ভোটকে বিপরীত মেরুতে একত্রিত করা হচ্ছে। তাই কোনো তোষণ নয়, প্রকৃত উন্নয়নই হবে মুসলমানদের প্রতিষেধক। সত্যি কথা, মুসলমানেরা সবসময় যেকোনো ক্ষমতাসীন সরকারের “ভোটব্যাঙ্ক”।শুধু তাই নয়; মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির শিকার।
-
যেখানেই বাঙালি সেখানেই ভোটে হিংসা, রক্তপাত, সন্ত্রাস। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ভারতের এই দুই রাজ্য ও প্রতিবেশী বাংলাদেশে নির্বাচনে রক্তপ্রবাহের দৃশ্য সবচেয়ে বেশি। কয়েক বছর আগেও বিহারকে আমরা জঙ্গলরাজ বলতাম। কিন্তু হিংসার আবহে বাংলা এখন কয়েক যোজন এগিয়ে। ভারতের অন্য রাজ্যে যখন রক্তপাতহীন ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তখন বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য বা দেশে নির্বাচনে রক্তপাত অতি স্বাভাবিক ঘটনা। বাঙালির এ বড় লজ্জা!