স্নেহজাল
ইন্দ্রনীল সান্যাল
দে’জ পাবলিশিং হাউজ
মূল্য ২০০
পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৬০
হার্ডকভার
মাস খানেক আগে ইন্দ্রনীল সান্যালের স্নেহজাল উপন্যাসটি পড়া শেষ করেছি তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত কারনে পাঠ্য প্রতিক্রিয়াটি লেখা হয়ে ওঠেনি। এটি ইন্দ্রনীল লেখকের চতুর্দশ উপন্যাস।
উপন্যাসটির প্রাককথনে আমরা দেখতে পাই দিল্লির ‘দাদাবৌদি হোটেল’ -এর মালিক মাইতি দম্পতি এবং তাদের বারো বছরের কন্যা দিয়া মাইতিকে। হঠাৎ একদিন রাত দুটো নাগাদ দিয়ার পেটে তীব্র ব্যথা শুরু হয়। ডাক্তার মনোহর চৌধুরীর চেম্বারে গিয়ে আলট্রাসোনোগ্ৰাফি করলে তারা জানতে পারেন যে দিয়া প্রেগন্যান্ট। এবং এটা ফুলটার্ম বেবি তাই গর্ভপাত এর কোনো পথ নেই। দিয়া সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। তার এই সন্তান ধর্ষনের ফল। এই ঘটনার তিন মাসের মধ্যে মাইতি দম্পতি হোটেল বিক্রি করে মেয়েকে নিয়ে চলে যান।
উপন্যাসটি শুরু হয় স্লিমিং সেন্টারের মালকিন নম্রতার খুনের মাধ্যমে। কিচেন নাইফ দিয়ে পেট কেটে নাড়িভুঁড়ির মধ্যে ফুটন্ত অলিভ অয়েল ঢেলে তাকে খুন করা হয়েছে এবং খুনি দেওয়ালে রক্ত দিয়ে টিক চিহ্ন এঁকে গেছে। এই পাশবিক খুনের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা চিনার মিত্রকে। তিনি খুনির মেন্টাল প্রোফাইল তৈরির জন্য দিল্লিনিবাসী ফরেনসিক সাইকায়াট্রিস্ট মোহর চ্যাটার্জির সাহায্য চান। মোহর কোনো সূত্রে জানতে পারে যে তার বায়োলজিক্যাল মা কলকাতার বাসিন্দা। সে তখন তদন্তের পাশাপাশি নিজের মায়ের সন্ধান শুরু করে। তদন্ত চলাকালীন মোহর এবং চিনারের মধ্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়।
তদন্ত শুরু করলে জানা যায় এই পদ্ধতিতে খুন অতীতেও হয়েছে এবং যারা খুন হয়েছেন তারা কোনো না কোনো ভাবে নম্রতার স্লিমিং সেন্টারের সাথে যুক্ত।এই থ্রিলারটিতে সকল চরিত্রেরই জীবনের ঘটনাগুলিকে পৃথকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় মনে হয় যে তারা একে অপরের সাথে জড়িত।
উপন্যাসটি পাঠকের মনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি করে।
কে এই খুনি? মোহরের বায়োলজিক্যাল মা কে? মোহরের আর চিনারের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার ভবিষ্যত কী?
পাঠক এটিতে একটি আদর্শ থ্রিলারের স্বাদ পাবে বলে আমি মনে করি।