চোখে চোখ রেখে দৃঢ় কণ্ঠে বলা যায় ইতিহাস আর বর্তমানের নিষ্ঠুরতম সত্য। নির্দ্বিধায় নির্ভয়ে দাঁড়ানো যায় কালের সমস্ত ভণ্ডামি আর সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে। সকালের স্নিগ্ধতার চেয়ে রাতের আঁধার গ্রাস করতো তাকে। সাম্প্রদায়িকতা, দাঙ্গা, বিভীষিকা, তার সাহিত্যের নিষিদ্ধ হওয়া, কোনটিই বাদ যায়নি। তার ওপর আঘাতের পর আঘাত এসেছে। তাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল শাসকেরা। কিন্তু তিনি তো চিরকালের।
স্মরণে
-
-
অনুরাধা অনেকের কাছেই আদর্শ ছিল। সে কখনো নিজেকে নিপীড়িত জনগণের থেকে আলাদা করে দেখতেন না যেটা সবাই আমরা প্রায়ই করে থাকি আমাদের জাতপাতের কারণে অথবা বস্তুগত অবস্থানের স্থান থেকে।
-
-
কবিতা মেধার শুধু নয়, হৃদয়েরও মানবিক উচ্ছ্বাসের প্রকাশ তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাই একদিকে শিশুতোষ জীবনের মর্মরিত আলোক সত্তা তাঁর কবিতায় প্রশ্রয় পেয়েছে, অপরদিকে মানবিক রসের প্রগাঢ় রূপায়ণ ঘটেছে। রোমান্টিক সত্তার সঙ্গে চিরপ্রেমিক সত্তা সংযুক্ত হয়েছে। যেখানেই মানবসংহার সংঘটিত হয়েছে, যেখানেই বিদ্বেষের বিষবাষ্প উঠেছে— কবি সেখানেই তাঁর প্রেমের অমৃতবাণী শুনিয়েছেন।
-
যাঁরা সি পি আই (এম) কে সংশোধনবাদী বলে গণ্য করেন ও নিজেদের মার্কসবাদী, লেনিনবাদী বা মাওবাদী বলে দাবি করেন তাঁদেরও বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনদিন কোন কথা বলেননি।
-
ব্রিটিশ-শাসিত বাংলার সমাজব্যবস্থা ও জনজীবনের পুনর্গঠন, বাঙালি জাতির রাজনৈতিক জাতিসত্তার নির্মাণ, বাঙালির গণজাগরণ, রাজনৈতিক সাহিত্যসৃষ্টি এবং সমাজসংস্কার আন্দোলনের দিশারী ছিলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক৷ শ্রেণিসংগ্রাম ও সৃষ্টিশীলতার সূত্র ধরে অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী ফজলুল হক রাজনৈতিক সাহিত্য নির্মাণের অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন৷ আবুল কাশেম ফজলুল হক (২৬ অক্টোবর ১৮৭৩-২৭ এপ্রিল ১৯৬২) একাধারে আইনজীবী, লেখক,সংসদ সদস্য ও সাহিত্যিক ছিলেন । বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাঙালি কূটনীতিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের নিকট শের-ই-বংগাল এবং ‘হক সাহেব’ নামে বিশেষ পরিচিত।
-
মানবজাতির মুক্তির দিশারী হজরত মুহাম্মদ (সা:)ছিলেন সভ্যতার অগ্ৰদূত,সম্প্রীতির প্রতীক৷ সকল ভাষাভাষী, সকল গোষ্ঠী, সকল গোত্র, সকল জাতির, সকল দেশের, সকল সংস্কৃতির, সকল ইতিহাস, সকল ঐতিহ্যের কাছে ইসলামের সাম্যবাদ পৌঁছে গেছে ৷সুফি বাংলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইসলামী উৎসব -পরব বিভিন্ন নামে বিভিন্ন জায়গায় উদযাপিত হতো৷ তার আগে স্মরণ হতো ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ ইমান ,নামাজ (সালাত), রোজা (সাওম) ,হজ্জ ,যাকাত ইত্যাদি৷
-
কবিগুরু একটি সুমহান দেশ ও জাতির শাশ্বত প্রতীক — চিরকালীন প্রতিনিধি। আজ দেশের এই সংকটময় সময়ে মানুষ যদি রবীন্দ্র চেতনায় পরিশোধিত করে নেয় নিজেকে, যদি বিশ্বের প্রতিটি মানুষ রবীন্দ্রবাণীর আদর্শে সর্বাত্মক মানবমুক্তি ও মানব প্রগতির লক্ষ্যে এগিয়ে চলার শপথ নেয় আমৃত্যু, তা হলে আমাদের স্বদেশ ও পৃথিবী সর্বপ্রকার ধ্বংস-বিভীষিকা, হিংসা, অসাম্য, অবক্ষয়ী মূল্যবোধ ও অশান্তির নরকগ্লানি থেকে পরিত্রাণ পাবে।
-
আবুবাক্কার একক কন্ঠে কাহিনীগান করলেও প্রত্যেক চরিত্রের কথা তার নিজ নিজ ভাষা ও ঢঙে করতেন। কাহিনী কথনের এই নাটকীয়তা তাঁকে কাহিনীকারদের জগতে রাজা করে রেখেছে। তিনি অবলীলাক্রমে মহিলা চরিত্রের ক্ষেত্রে মহিলা কন্ঠে কথা বলতে পারতেন এবং মহিলা কন্ঠে গানও গায়তে পারতেন।
-
শঙ্খ ঘোষ প্রতিটি কবিতায় যেমন কষ্টকে দেখেছেন, তেমনি কষ্টের উৎস থেকেই কবিতার নির্মাণ করেছেন এবং পরিণতিতে স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছেন। তাঁর কবিতায় এই স্বপ্নাকাঙ্ক্ষারই অমরত্ব প্রাপ্তি। ছন্দের ভেতর অন্ধকার থাকলেও, কিংবা মূর্খ বড়ো, সামাজিক না হলেও, কিংবা শূন্যের ভেতর ঢেউয়ের উপস্থিতি উপলব্ধি করলেও জীবনের সংরাগে বারবার তা উচ্ছল হয়ে উঠেছে। বাস্তব পৃথিবীর হাহাকার, ক্লেশ, সংঘাত, বিবর্ণতা কবিকে অস্থির করলেও আত্মজ্ঞানের পরিধিতে কবি সমাহিত সংহত স্রষ্টা হিসেবেই বহুমুখী পর্যটনে তাকে ধারণ করেছেন । তাই কবিতার শিল্পনৈপুণ্যের সিদ্ধিতে কোনও ঘাটতি দেখা দেয়নি। আমাদের বাহ্যিক দৃষ্টি এবং অন্তর্দৃষ্টির আলোয় এক প্রসন্নতার ঘোর সৌজন্য এসে উপস্থিত হয়েছে।