মসজিদের দায়িত্ব এবার ছেড়েই দেবেন। আর এই বুনো ফুলের আগাছাকে নিয়ে গিয়ে টবে পুঁতে রাখবেন। যদি বেঁচে যায় তবে এই ফুলগুলোই হয়ে থাকবে এতদিনের স্মৃতি হয়ে।
গল্প
-
-
কাকা ওই দাঁতের হিংস্রতা দেখে ভয় পেয়ে যান। কাকা এমনিতেই খুব সাহসী লোক। আচমকা দেখেই তিনি ভীষণ রকম চমক পেয়েছেন। বিষয়টা অনেককে বলতেই কেউ খুব একটা পাত্তা দেয়নি। না দেওয়াটাই স্বাভাবিক। এই রকম কথা আগে কেউ কখনো শোনেনি। তাছাড়া এই গ্রামে দুটো মাঠ। একটি নদীর পাড়ে,যেটি ‘চরের’ মাঠ নামে পরিচিত।আরেকটি পরিচিত ‘মেটিল’ মাঠ নামে। সব থেকে বড় কথা দুটো মাঠই চারদিকে গ্রাম দ্বারা বেষ্টিত। এমন অদ্ভুত প্রাণী গ্রামে কারো না কারো চোখে নিশ্চয়ই পড়তো।
-
ভদ্রলোকের অতিরিক্ত ইনভলভমেন্টের কারণটা রক্তিম এতক্ষণে বুঝতে পারল। বলল, ‘তাই বলুন। তা কী করে আপনার মেয়ে? চাকরি? না, এখনও পড়াশোনা চালাচ্ছে?’ ভদ্রলোকের গলাটা এবার একটু বাষ্পাচ্ছন্ন শোনাল। বললেন, ‘কিচ্ছু করে না ভাই। ওপরে চলে গেলে কি কিছু আর করা যায়? দু’বছর আগেই আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে ভাই। অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটাকে বাঁচাতে পারিনি।’
-
হিন্দু সব এক, বা মুসলমান সব এক। এটি একমাত্র চরম বিপদের সময়ের উপলব্ধি। অন্যসময় নয়।
-
পড়ার হাত থেকে ছুটি মিলত। পা রাখতাম ঘরের বাইরে। সেখানে তবু চাঁদের আলো-টালো পড়ত। দূরে কোথাও যাওয়ার ছাড়পত্র ছিল না। উল্টো দিকের বাড়ির রকে চার-পাঁচজন বন্ধু মিলে আবার জমাতাম আড্ডা।
-
আহমদ মুখ তুলতেই পাশে বসে থাকা আরেক ছাত্র জানালো যে, “স্যর সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে ভোটের দিন লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ভোট দেবেন বলে। দুই পক্ষের লড়াই শুরু হয়, তারপর মুহুর্তেই কিসের যেন বিকট আওয়াজ হয়, অন্ধকারে ঢেকে যায় চারিদিক, সেখানেই মৃত্যু হয়েছে আহমদের পিতা আব্দুল হুসেনের!
-
মতিনের কালজীর্ণ দুধেরসরের মতো কুঞ্চিত হাতটি বন্ধু সুনীল, শক্ত করে বুকের কাছে চেপে ধরে স্থাণু হয়ে বসে আছে ! হাসপাতালের এই ক্ষুদ্র কামরায় যেন মাঘমাসের কড়া শীত ভর করেছে। ঘরেরকোণে সলতেবাতির মতো একটিমাত্র ধূসর নীল বিজলিবাতি জ্বলছে তাও বেজায় টিমটিম করে। অস্পষ্ট আলো-আঁধারির রহস্যময় চাদরে ঢাকা দিয়ে আছে ঘরটি। সুনীল সেই কখন থেকে একইভাবে বন্ধুর হাত ধরে বসে আছে- মুঠিবদ্ধ হাতেরপরে দু’ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়তে মস্তিষ্কের খোঁড়লে ডুবে থাকা স্মৃতিরা সহসা তাকে ফেরত নিয়ে যায় বহুদূরের সেই হিজলতলা গাঁয়ে, তেলাকোঁচ-লতার মতো জড়াজড়ি করে দু’বন্ধুর নির্ভারে কেটে যাওয়া অতীতের দিনগুলোতে।
-
একটা সরাল ডেকে গেল। তারপর ও কোন দিকে যে উড়ে গেল। বন চাঁদ ঘাড় ঘোরাবার আগেই ও পালাল। বিশি মাঝি…
-
হাতের কাস্তে হাতে নিয়েই সাবু বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল সুফল। তারপর আরও কয়েকটা জায়গায় গেছে। এ বাড়ি ও বাড়িতে কাজের খোঁজ করেছে। কিন্তু সবখানেই তাকে নিরাশ হতে হয়েছে। খালি হাতে ফিরতে ফিরতে ক্লান্ত হয়ে এক সময় ফিরে এসেছে বাড়ি। আর বাড়ি ফিরেই ক্লান্ত শরীরটাকে বাঁশের খুঁটিতে হেলান দিয়ে বসে পড়েছে দাওয়ায়।
-
আমার চোক দেকেই মানুছ আমাকে ভয় করতোক। ফলে য্যাখুন যে পাপ কত্তে মুন চাহালচে ত্যাখুন ছে পাপ করেচি। কাহুকে কুনু ডর করিনি। এ্যামুন কী তুমাকেও না। কিন্তুক এ্যাখুন খুব ভয় কচ্চে। মরার পরে আমার কী হবে? আমার কী হবে? তাই, এ্যনেক পাপের মধ্যে থিক্যা বাচাই করা দুড্যা পাপ তুমাকে ছুনাবো। ছুনান্যার পর তুমার কাচে ক্ষ্যামা চাহাবো। তুমি আমাকে ক্ষ্যামা করে দিও খুদা, তুমি আমাকে ক্ষ্যামা করে দিও।