পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ প্রান্তিক বাঙালি মুসলমানদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পরিচয়ের অনেক ‘না বলা কথা’ নিজের মতো করে বলার চেষ্টা করেছি।তাদের মানসিক জগৎ এবং তাদের দৈনন্দিন দিন-আনা, দিন-খাওয়া জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত সামাজিক, ধর্মীয়, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মিডিয়া, ইত্যাদির বিষয় সম্পর্কে প্রায় সব ‘অনালোচিত’, ‘অকথিত’ এবং ‘নিষিদ্ধ’ কথার আলোচনা আমি করেছি।
বাংলার মুসলমান
-
-
সোনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই পাশাপাশি বাস, তবে কেন উদাসীন? ধর্মকে কেন্দ্র করে মানুষে মানুষের যে বিভেদের প্রাচীর গড়ে উঠছে, এই মেরুকরণের একেবারে বিপরীতে অবস্থান করে। তাঁর মতে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই রক্ত ঝরিয়েছে l সেখানে উচ্চবর্ণ, নিম্নবর্ণ, দলিত আদিবাসী ইত্যাদির কোন ভেদাভেদ নেই l কিন্তু লেখক লক্ষ্য করছেন যে মূলত ধর্মকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে ঘৃণা, বিদ্রুপ , তাচ্ছিল্য ও ভুল ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।
-
যাঁরা সি পি আই (এম) কে সংশোধনবাদী বলে গণ্য করেন ও নিজেদের মার্কসবাদী, লেনিনবাদী বা মাওবাদী বলে দাবি করেন তাঁদেরও বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনদিন কোন কথা বলেননি।
-
গত পঞ্চাশ বছরে সরকারি চাকুরি ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবস্থা তথৈবচ। তাঁরা প্রদীপের নিচে জমাট অন্ধকারে আছে। এই অভিযোগ নির্দিষ্ট কোনো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়। কম বেশি সব সরকারই দায়িত্ব এড়াতে পারে না “তোষণ” শব্দটি মুসলমানদের ক্ষেত্রে সবৈব মিথ্যে। অথচ, তোষণ আজ বিভাজনের রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে ,তোষণ যদি সত্যি কোনো সরকার করত তবে মুসলমানদের উন্নতি হতো।আসলে ওসব কাগুজে বক্তৃতা। তাছাড়া, সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেই বরাদ্দকৃত অর্থ কোনদিনই খরচ তো হয় না ,বরং দুর্নীতিবাজদের পকেটস্থ করার ব্যবস্থা হয় ।এই “তোষণের” অপপ্রচারের দ্বারা সংখ্যাগুরু ভোটকে বিপরীত মেরুতে একত্রিত করা হচ্ছে। তাই কোনো তোষণ নয়, প্রকৃত উন্নয়নই হবে মুসলমানদের প্রতিষেধক। সত্যি কথা, মুসলমানেরা সবসময় যেকোনো ক্ষমতাসীন সরকারের “ভোটব্যাঙ্ক”।শুধু তাই নয়; মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির শিকার।
-
তথ্যানুসন্ধানী এই বই বাঙালির মননকে জাগিয়ে তুলে এক নতুন সকালের দিশা দেখাবে বলে বিশ্বাস, একে অপরের ধর্ম-সংস্কৃতি, সচেতনতা ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে দিতে এই বই এক অনন্য নিদর্শন হয়ে থাকবে বলে বিশ্বাস।জানুন নিজেকে, নিজের সমাজ, ধর্ম ও দেশকে।