ইদের দিন ভোর। কিন্তু কুনু হাঁক ডাক নাই। বাড়তে বাপ চিল্লায়, মা ডাকে। খাস্সিট্যাকে ধওয়া, নিজে গা ধো, জামাত ছুইট্যা যাইবে, কত্ত কী! এঠে আগিথ্যাকায় ডোলে পানি রেডি গা ধুইবের লাইগ্যা। লয়া পাঞ্জাবি বিছ্যানে থওয়া। আয়না, চিরোনি, আতর লিয়া বহুটা খাড়্হিয়া। বাড়তে এই ঘরে আয়না, ঐ ঘরে চিরোনি, কুন্ঠে পাঞ্জাবি তো কুন্ঠে টুপি। জুত্তা ঢুঁরতে একব্যালা। এঠে কুনু দৌড় ঝাঁপ নাই। রেডি হোয়্যা ইদ পড়তে গ্যালো ।
July 2023
-
-
আধুনিক রাজা-রানিরাও কবি ভারভারা রাও, সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নওলাখা, স্ট্যান্ স্বামী,ডাক্তার কাফিল খান, সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান, মোঃ জুবায়ের, ছত্রধর মাহাতোদের ‘রক্ষা’ করতে জেলখানাতেই রাখেন! এই কাজে তাদের সহায়ক হয় ১৮৭০ সালের রাজদ্রোহ আইন, ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের কার্বনকপি ইউএপিএ এবং ইউএপিএ – ২, আফস্পা ইত্যাদি। এমনকি রবি ঠাকুরের রাজ্যেও এখন বিদ্বেষবাদীদের অভিযোগক্রমে সুপরিচিত সম্প্রীতি-সাধকের ‘নিরাপত্তার জন্যই’ রাতভর থানায় আটক রেখে পরের দিন জামিন অযোগ্য ধারায় কোর্টে তোলা হচ্ছে! সেই পুলিশ-কেস কবে শেষ হবে তা কেউই জানেন না!
-
মহাত্মা গান্ধী ১৮৯৩ সালে আইনজীবী হিসেবে সর্বপ্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পা রাখেন এবং ১৯১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর সেদেশে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন। অপরদিকে মওলানা ভাসানী ১৮৯৭ সাল থেকে (সৈয়দ আবুল মকসুদের মতে ১৯০৪ সাল থেকে) ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় পাঁচ দশক আসামের নিপিড়িত বাঙালিদের অধিকার রক্ষায় বিশেষভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করেন। আসামের ‘লাইন প্রথা’ ও ‘বাঙ্গাল খেদা’ নামক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তিনি প্রায় একা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। দু’জনেই নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে বিদেশ বিভূঁইয়ের বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে রাজনৈতিক জীবনের গোড়াপত্তন করেন। কিন্তু শ্রেণিচেতনার বৈপরিত্য ও সাধারণ মানুষের জন্য অতি সাধারণ বেশ—ভুষা সম্পন্ন একজন মজলুম জননেতা বলে মওলানা ভাসানীর এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন ইতিহাসের প্রাণপ্রদিপের আলোয় স্থান পায় নাই। যেমনটি মওলানা ভাসানীর অনুরোধ সত্ত্বেও সেদিন মহাত্মা গান্ধী কিংবা জিন্নাহ সাহেবেরা আসামের নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ান নাই। উপমহাদেশের রাজনীতিতে সেই বৈপ্যরিত্ত্বের রাজনীতি এখন আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই গণমানুষের রাজনীতি আর ইতিহাসের প্রয়োজনেই মওলানা ভাসানী বারবার ফিরে আসে। যেখানে গণমানুষ ও মওলানা ভাসানীর আসাম জীবন একাকার।
-
গত পঞ্চাশ বছরে সরকারি চাকুরি ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবস্থা তথৈবচ। তাঁরা প্রদীপের নিচে জমাট অন্ধকারে আছে। এই অভিযোগ নির্দিষ্ট কোনো সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়। কম বেশি সব সরকারই দায়িত্ব এড়াতে পারে না “তোষণ” শব্দটি মুসলমানদের ক্ষেত্রে সবৈব মিথ্যে। অথচ, তোষণ আজ বিভাজনের রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে ,তোষণ যদি সত্যি কোনো সরকার করত তবে মুসলমানদের উন্নতি হতো।আসলে ওসব কাগুজে বক্তৃতা। তাছাড়া, সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেই বরাদ্দকৃত অর্থ কোনদিনই খরচ তো হয় না ,বরং দুর্নীতিবাজদের পকেটস্থ করার ব্যবস্থা হয় ।এই “তোষণের” অপপ্রচারের দ্বারা সংখ্যাগুরু ভোটকে বিপরীত মেরুতে একত্রিত করা হচ্ছে। তাই কোনো তোষণ নয়, প্রকৃত উন্নয়নই হবে মুসলমানদের প্রতিষেধক। সত্যি কথা, মুসলমানেরা সবসময় যেকোনো ক্ষমতাসীন সরকারের “ভোটব্যাঙ্ক”।শুধু তাই নয়; মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির শিকার।
-
একদিন চুপিচুপি বাড়ির কিষান ফেরেসতুল্লার সঙ্গে বাল্য বয়সে গিয়েছিলেন আলকাপের আসরে।তাঁদের গ্রামের কয়েকটি গ্রাম পরে, শ্রীপুরে। তখনও তিনি স্কুলে ভর্তি হননি। সময়ের পূর্বেই পৌঁছে যান। অধিক কৌতূহল নিয়ে ঢুকে পড়েন তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ আলকাপ শিল্পী রিয়াজুদ্দিনের ডেরায়। তাঁরা তখন খানাপিনায় ব্যস্ত। বালক কাশেমকে ডেকে নেন খেতে। খাওয়া হলে দু’আনা পয়সা দিয়ে বলেছিলেন ফিতা এনে দিতে। কাশেম ছুটে যান দোকানে। দামদর করে ফিতা কিনেন ঠিকই কিন্তু পকেটে হাত দিয়ে দেখেন পয়সাটা নেই। ভয়ে ফিরে আসতে পারেননি। রিয়াজুদ্দিন সাহেব লোক পাঠিয়ে ধরে আনেন। ঘটনা শুনে তাঁর মনে হয় পয়সাটা সে খেয়ে নিয়ে এখন মিথ্যে কথা বলছে। সটান কষে দেন একটা থাপ্পড়। বালক কাশেম উল্টে পড়েন এবং জ্ঞান হারান। কয়েকজনের শশ্রুষায় সুস্থ হয়ে উঠেন এবং আসরে বসে গান শোনেন। সেদিনই তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, তিনিও একদিন কবিয়াল হবেন এবং রিয়াজুদ্দিন সাহেবকে প্রতিযোগিতায় হারাবেন।