তাতে,আল্লা খুশি হয়ে খেত ভরা ফসল দিবেক, চাষার ঘরের আয়-বরকত সব বেড়ে যাবেক। খাওয়া-পরার কুনুদিন অভাব হবেকনি। আর একটা হজ করার সমান পূণ্যি হবেক। সেই থেকি খুঁতো গরু জম্ম নিলেই যানগরু বানিয়ে অনেকেই ফকিরের হাতে তুলে দেয়। গরু নিয়ে ফকির গাঁয়ে গাঁয়ে ঘুরে, যে চাল-ধান দান করে, তাদের পাপের বোঝা যানগরু নিজের পিঠে নিয়ে নেয়। আর তুরা ভাবিস লেজ কাটার কথা! ওসব চিন্তা মনে আনাও পাপ। তওবা তওবা কর।
গল্প
-
-
তাই বিপথগামী এই যুবকদের মাথায় একাংশ রাজনীতিবিদ ঢুকিয়ে দিচ্ছে-নিম্ন আসাম থেকে উজান আসামে কাজের সন্ধানে যাওয়া, নদী-ভাঙনের শিকার শ্রমিকরা তাদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে,তাই অসমীয়া যুবকেরা কাজ পাচ্ছে না।আসামের আর্থিক দুরাবস্থার জন্যে এরাই দায়ী।তাই এই শ্রমিকদের ওরা তাড়িয়ে দিতে চায় আসাম থেকে, তাদেরকে বাংলাদেশী হিসেবে প্রতিপন্ন করতে চায়।
-
ক্লাস সেভেন থেকে ঘটলো ছন্দপতন। যে ছেলের ইংরেজি খাতায় একটা লাল দাগ দিতে পারতেন না জীবনবাবু, সেই ছেলের পড়াশোনায় মন নেই একদম। এত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলে এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে! অনেক বোঝালেন।কোন লাভ হয় নি।ঠাকুমাকে, বাবাকে ডেকেও বলা হলো। বাবা ভ্রুক্ষেপহীন। আর ঠাকুমার চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কী বা করার আছে!
-
দিন শেষের সমস্ত আলো মুছে গিয়ে সন্ধে নামছে।একটা অস্পষ্টতায় ঢাকতে শুরু করেছে চারিদিক।বনবাবলার মাথার ওপর থেকে কখন উড়ে গেছে বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙারা।দিগন্তের রক্তিমাভা ঢেকে যাচ্ছে ঝাঁপসা অস্পষ্টতায়।আমি তাকিয়ে আছি সুপ্রিয়ার দিকে।বারে বারে ফিরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে সেইসব দিনগুলোয়।সেই বিকেল।সেই নদীপাড়।সেই সন্ধে নামা।সেই বনবাবলার মাথার উপরে বসে থাকা বক,পানকৌড়ি, আর মাছরাঙা।সেই ঝিঁঝিঁর ডাক।সেই –
-
কিন্তু অপারেশন সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই রোগী মারা যায়। স্বামীর মতো একদিন রহিমা বিবিও। মা-বাপের মতো একদিন লাল্টুও। তবে লাল্টুর চলে যাওয়াটা মা-বাপের মতো মুখ দিয়ে রক্ত তুলতে তুলতে নয়। অন্য রকম ভাবে। প্রথমে সে জায়গাটা খুঁড়তে শুরু করে। জিনিস গুলো তখন নীচের দিকে নামতে শুরু করে। যত খুঁড়ে তত নামে। যত খুঁড়ে তত নামে। তবু লাল্টু খোঁড়া বন্ধ করে না। সে বলে—পাতালে গ্যালেও পাতাল থিক্যা তুলে আনবো। কতো নীচে নামতে পারিস নাম না! তারপর আমি দেকছি। লাল্টুর জেদ ধরে যায়। জেদের বশে সে হুক হুক করে খুঁড়ে যায়। খুঁড়তে খুঁড়তে মাথার ওপর খোঁড়া হলে দুই দিকের মাটি এসে ঢেকে যায়। মন্টু এসব দেখে সাহস করে আর ও ঘরে কোনো দিন ঢোকেনি। ঘরটা এখন তালাবন্ধ।
-
মদই হোক বা মিছরি, প্রবাদ-প্রবচন হোক বা ভোজন, বাঙালি গ্রাম্যজীবনে তাল-সংস্কৃতির ছাপ খুব গভীর। তালগাছ বাঙালির ফ্যানগাছ। তালপাখার ঠান্ডা বাতাস যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে ফ্যানের আরাম দিয়েছে। প্লাস্টিকের সর্বগ্রাসী ব্যবহার আসার আগে তালপাতার চাটাই, মাদুর, বসার আসন, তালপাখা গ্রামবাংলার মাটির সংসারের স্থায়ী সদস্য ছিল। তালপাতার পুতুল, চরকা ছিল বাংলার শিশুর খেলার সাথী। একসময় শিশুর হাতের-লেখার খাতা ছিল তালপাতা। বহু প্রাচীন তালপাতার পুঁথিও আবিষ্কৃত হয়েছে। তালগাছের কাণ্ড দিয়ে তৈরি ডিঙি, নৌকায় ভাটিয়ালি গানের ঢেউ উঠত বাংলার নদীতে। সিমেন্ট আবিষ্কারের অনেক আগেই তালগাছের লম্বা আর শক্ত কাণ্ড ধনীদের কড়িবরগার দালানকোঠা উপহার দিয়েছিল। আর দরিদ্রের কুটিরে দিয়েছিল তালপাতার ছাউনি।
-
বিরাট পাকুড় গাছের তলে বাঁশের মাচা। খালি গায়ে গ্রামের মানুষ, মুনিশ এই মাচায় সুযোগ পেলেই একটু জিরিয়ে নেয়।নগ্ন শরীরের ঘন ঘন আলিঙ্গনে মাচার গা একেবারে তেল তেলে। মাছি বসলে পিছলে পড়ার উপক্রম।বেলা বেশি হয় নি। পাকুড়গাছতলা পাড়ার মরূদ্যান। ক্লান্ত কৃষক এর তলে বসে তার ক্লান্তি ভোলে।
-
কিছুক্ষনের মধ্যে জীবন বিশ্বাস অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার শেষ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। বাবার শেষ পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে ছেলে বলে, ‘বাবা এখন বৃদ্ধ হয়েছেন, তার বাঁচার জন্য একটা শান্ত পরিবেশ দরকার। আমার ছেলে বাড়ীতে সবসময় খেলাধূলা, চিৎকার ইত্যাদি করে, তাই বাবার পক্ষে ভাড়া বাড়িই শ্রেয়। কাজের লোক দেখাশোনা করবে, অসুবিধা তো কিছু নেই।’
-
“ছোটো থেকেই দেখেছি, আমাদের সংসারের অভাব, বাবা যতক্ষণে রিকশা ঠেলেছে আমাদের হাঁড়ি চড়েছে। সাত তালি দেওয়া ছেঁড়া কাপড় পরে বড়ো হয়েছি। তখন কোথায় ছিল আপনাদের ফরমান? কই একটা নতুন ফ্রক এনে দিয়ে তো বলেননি- মা রে এটা পর। অন্য দিকে এই হুজুরের কাছে যখন আরবি পড়তে যেতাম, আমার ছেঁড়া ফ্রকের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতো, কখন যেন আমার শরীরের ভাঁজ দেখতে পাবে। আমার ছেঁড়া কাপড়ে যদি তোমাদের কামরস জাগ্রত হয়, সে লজ্জা আমার না সমাজের?”
-
কখনো সাপের মুখে পড়ে সাঁ করে নেমে যাওয়া, আবার কখনো বা মইয়ে চড়ে ওপরে উঠে যাওয়া। বড় সাপ, ছোটো সাপ,…