সকল ঈদের সেরা ঈদ ” ঈদ -এ- মিলাদুন্নবী(সা:) ৷ এই দিনটিকেই ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হজরত মহম্মদ (সা: )এর জন্মদিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ( 12 রবিউল আওয়াল আরবি মাসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম ) বিপুল উৎসাহের সাথে ,জাঁকজমক ,ভক্তি ও মর্যাদার সঙ্গে দান ,সাদকা , কুরআন তিলাওয়াত , লঙ্গর ও খানাপিনার মহফিল ,বিভিন্ন রকমের খাবার ও মিষ্টান্ন তৈরি,জনকল্যাণমূলক কর্ম, নাত এ রসূল পাঠ ,কাসীদা, গজল , জলসা মহফিল ,জুলুসের জসনের মাধ্যমে মিলাদ মাহফিল উদযাপন করা হয়। আজও মিলাদুন্নবীর উৎসব পালন হয় সামাজিক ও সংস্কৃতির ঐক্যের জন্য ,ধর্মীয় সংস্কৃতির কারনে৷ এই মিলাদের কথা আল -কুরআন ও সহীহ হাদীস এবং ফিকহ শাস্ত্রের দ্বারা প্রমাণিত ।তবে এ উৎসব ও জন্ম তারিখ নিয়ে ইসলামি পণ্ডিতদের মাঝে কিছুটা বিতর্ক ও মতভেদ থাকতে পারে ৷ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের জন্ম বছর ও জন্মবার সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত আছে৷ হযরত মুহাম্মদ( সা:) হাতীর বছর ও সোমবার জন্মগ্রহণ করেছেন৷ হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ইব্ন ইসহাক এর মতে হযরত মুহাম্মদ (সা: ) হাতীর বছর রবিউল আউয়াল এর 12 তারিখে জন্মগ্রহণ করেন৷সাহীহ সনদ সূত্রে বর্ণিত আছে যে – ইমাম আহমদ তাঁর মুসনাদে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণিত ,তিনি বলেন ” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম সোমবার জন্মগ্রহণ করেন এবং ইন্তেকাল করেন ৷সোমবার মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনার পথে রওনা করেন ,সোমবারে মদীনা পৌছান এবং সোমবারেই তিনি হাজরে আসওয়াদ ( জন্নতী কালো পাথর ) উত্তোলন করেন৷অধিকাংশ মুসলিম উম্মা ” বিশ্ব নবী দিবস ” এর উৎপত্তি ও বিকাশের ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত নন ৷ইসলামের প্রথম যুগের সাহাবী ,তায়িবী ও তাবে – তাবিয়ীদের মধ্যে জন্মদিন উদযাপন করার প্রচলন বর্তমান ধারায় থাকতে পারে ৷ তাই ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বৈধতা ও অবৈধতা নিয়ে আমাদের আলিম সমাজে মতবিরোধ ৷
পবিত্র মিলাদুন্নবীর ইতিহাস অতি প্রাচীন । মিলাদুন্নবীর সূচনা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন । রোজে আজলে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কিরামকে নিয়ে আল্লাহ্ এই মিলাদের আয়োজন করেছিলেন । নবীগণের মহাসম্মেলন ডেকে মিলাদুন্নবী মাহফিলের আয়োজক স্বয়ং আল্লাহ্ । ঐ মজলিশে একলক্ষ চব্বিশ হাজার বা মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বর (আঃ) উপস্থিত ছিলেন । ঐ মজলিশের উদ্দেশ্য ছিল হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের বেলাদাত, শান, মান ও অন্যান্য নবীগণের সামনে তুলে ধরা এবং তাঁদের থেকে তাঁর উপর ইমান আনয়ন ও সাহায্য সমর্থনের প্রতিশ্রুতি আদায় করা ।
এতে আল্লাহ্ তায়ালা ঐ মিলাদুন্নবী মাহফিলের কথা উল্লেখ করেছেন । নবীজীর সম্মানে এটাই ছিলো প্রথম মিলাদ মাহফিল এবং মাহফিলের উদ্যোক্তা ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্ তায়ালা । সুতরাং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠান হচ্ছে আল্লাহ্র সুন্নাত বা তরিকা । ঐ মজলিশে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামও উপস্থিত ছিলেন । ঐ মজলিশে স্বয়ং আল্লাহ্ নবীজীর শুভ আবির্ভাব বা মিলাদের উপরই গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন । সমস্ত নবীগন খোদার দরবারে দাঁড়িয়ে থেকে মিলাদ শুনেছিলেন এবং কিয়াম করেছিলে । কেননা, খোদার দরবারে বসার কোন অবকাশ নেই । পরিবেশটি ছিলো আদবের । মিলাদ পাঠকারী ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্ এবং কেয়ামকারীগণ ছিলেন আম্বিয়ায়ে কেরাম ।
কুর আন মাজিদের নস চার প্রকার যথাঃ- ইবারত, দালালাত, ইশারা ও ইক্কতিজা । উক্ত চার প্রকার দ্বারাই দলীল সাবিত হয় ।আল কুরআনের ইবারাতের দ্বারা প্রমানিত হয়েছে অঙ্গীকার/দালালাতের দ্বারা নবীগণের মাহফিল, ইশারার দ্বারা মিলাদ বা আবির্ভাব এবং ইকতিজার দ্বারা কিয়াম প্রমানিত হয়েছে ।
সুতরাং মিলাদুন্নবী মাহফিলে কেয়ামসহ নবীগণের সম্মিলিত সুন্নাত ও ইজমায়ে আম্বিয়া দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ।
ইসলাম ধর্ম আরবে উৎপত্তি হলেও প্রসার ও প্রচার সকল দেশের সীমানা অতিক্রম করে সাম্যবাদী , ভ্রাতৃত্ববোধ , নৈতিক গণতন্ত্র ,দাসত্বের মুক্তি ,আধুনিক ,প্রগতিশীল ভাবে পৃথিবীর বুকে এক বিপ্লব ও আন্দোলনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে৷ইসলামের মধ্যে মূল আদর্শগত অপরিবর্তিত থেকে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ভাবে বিভিন্ন ভাবে ইসলাম ধর্মের বিস্তৃত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৷ ধর্মীয় স্থিতিশীল আর সংস্কৃতি গতিশীল৷তাই সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবের রীতিনীতি ইসলাম ধর্মে ইজমা ও কিয়াস এর মাধ্যমে গণ্য করা হয়৷ বিভিন্ন দেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বী থাকলেও দেশভিত্তিক একটি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অবশ্যই থাকে৷যে দেশে হোক ,ইসলাম ধর্মীয় মতাদর্শে সংস্কৃতি লালন পালন করা ইমানের জন্য ক্ষতি নয়৷
নবী (সা.) এর সময়, খোলাফায়ে রাশিদিনের সময় এবং উমাইয়া খলিফাদের সময়ে ঈদে মিলাদুন্নবী উৎসব ছিল সেই সময়ের সংস্কৃতি অনুযায়ী। আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে বাদশা হারুনুর রশীদের মাতা খায়জুরান বিবি (১৭৩ হিজরী) মদীনা শরীফে নবী (সা.) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করার ও সেখানে দুরূদ ও দু’আ পাঠ করার যে ব্যবস্থা রয়েছে, ঠিক সেভাবে নবী (সা.) মক্কায় যে ঘরে ভূমিষ্ট হয়েছিলেন, সেই ঘরটির জিয়ারত ও সেখানে দু’আ করার প্রথা সর্ব প্রথম আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে বাদশা হারুনুর রশীদের মাতা খায়জুরান বিবি (১৭৩ হিজরী) চালু করেন।
পরবর্তী কালে ১২ রবিউল আওয়ালে ঐ নারীর নেতৃত্বে র্তীথযাত্রীগণ প্রতি বছর নবী (সা.) এর জন্ম দিবস ধরে নিয়ে ঐ ঘরে আনন্দোৎসব পালন করেন।
দুই ঈদের বাইরে কোন দিবসকে সামাজিক ভাবে উদযাপন করে শুরু হয় হিজরী 8 র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শিয়া মুসলমানদের উদ্যোগে মিশরে৷এই সময় আব্বাসীয় খেলাফতের( প্রথম অধ্যায় শেষ 232 হিজরী ,847 খ্রী) দূর্বলতা ,শিয়া ও সুন্নি সংঘর্ষ ,মুসলিম সাম্রাজ্যে অন্তরে ও বাহিরে রাজনৈতিক অস্তিরতা ,অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবনতির সূচনা হয় , এই পরিস্থিতিতে জ্ঞানচর্চা ,ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকাশ ব্যহত হয়৷ এশিয়া মাইনর, আর্মেনীয়া, ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন খ্রিষ্টান শাসক সুযোগমত ইসলামী সম্রাজ্যের অভ্যন্তরে আগ্রাসন চালাতে থাকে। অপরদিকে সমাজের মানুষের মধ্যে বিলাসিতা ও পাপাচারের প্রসার ঘটতে থাকে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে ইসলাম বিরোধী আচার আচরণ, কুসংস্কার, ধর্মীয় বিকৃতি ছড়িয়ে পড়ে। এই যুগের বিচ্ছিন্ন ইসলামী সম্রাজ্যের একটি বিশেষ অংশ ও ইসলামী সভ্যতার অনত্যম কেন্দ্র মিশরে ফাতেমী খলীফা আল-মুয়িজ্জ লি-দীনিল্লাহ সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন্নবী, অন্যান্য জন্মদিন পালন ও সে উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের শুরু করেন।এবং কায়রো শহরের পত্তন করেন।আল মুয়িজ্জ এর প্রচলিত এই ঈদে মীলাদুন্নবী ও অন্যান্য জন্মদিন পালন ও উদযাপন পরবর্তী প্রায় ১০০ বছর কায়রোতে শিয়াদের মধ্যে এই উৎসব চালু থাকে৷আহমদ ইবন আলী আল-কালকাশান্দী (৮২১হি:) লিখেছেন: ‘‘রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে ফাতেমী শাসক মীলাদুন্নবী উদযাপন করতেন৷৫১৫ হিজরীতে খলিফা আমির বিল আহ-কা-মিল্লা তা পুনরায় চালু করেন।
পরবর্তীতে কুরআন সুন্নাহর অনুসারী গাজী সালাহউদ্দীন আইয়্যুবী (৫৩২-৫৮৭ হিজরী) ঈদে মিলাদুন্নবীসহ সকল জন্মবার্ষিকী উৎসব বন্ধ করে দেন।মাঝখানে এই উৎসব বন্ধ হয়ে আবার কোন এক ফাতেমী শাসক চালু করেন৷তবে যিনি ঈদে মীলাদুন্নবীর উৎসব পালনের প্রবর্তক হিসাবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ এবং যিনি ঈদে মীলাদুন্নবীকে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম উৎসব হিসাবে প্রতিষ্ঠা দানের কৃতিত্বের দাবিদার তিনি হচ্ছেন ইরাক অঞ্চলের ইরবিল প্রদেশের শাসক আবু সাঈদ কূকবুরী (মৃত্যু: ৬৩০হি:)।৬ষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে ৭ম হিজরী শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়কাল ছিল মুসলিম উম্মার জন্য দুর্দিন ও মুসলিম ইতিহাসের এক বেদনাদায়ক অধ্যায়৷বাইরের শত্রুর আক্রমণ, বিশেষ করে পশ্চিম থেকে ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের আক্রমণ এবং পূর্ব থেকে তাতার ও মোগলদের আক্রমণ।
ক্রুসেড যুদ্ধের শুরু হয় হিজরী ৫ম শতাব্দীর (খ্রীষ্টিয় একাদশ শতাব্দীর) শেষদিকে। ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকেই অন্ধকারাচ্ছন্ন ইউরোপে খ্রিষ্টান ধর্মযাজকগণ বিভিন্নভাবে ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী প্রচারণা করতে থাকেন।তাঁদের অভ্যন্তরের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও জাতিগত বিভেদ ও শত্রুতা ভুলে পোপের নেতৃত্বে প্যালেষ্টাইনের পবিত্রভূমি উদ্ধারের নামে লক্ষ লক্ষ সৈনিকের ঐক্যবদ্ধ ইউরোপীয় বাহিনী নিয়ে মুসলিম সাম্রাজ্যের উপর আক্রমণ চালাতে থাকেন। ৪৯১ ও ৪৯২ হিজরী সালে (১০৯৭ ও ১০৯৮ খ্রি:) প্রথম ক্রুসেড বাহিনীর দশ লক্ষাধিক নিয়মিত সৈনিক ও স্বেচ্ছাসেবক এশিয়া মাইনর ও সিরিয়া এলাকায় বিভিন্ন মুসলিম দেশে হামলা করেন। এই হামলায় প্রায় ২০ সহস্রাধিক মুসলিম সাধারণ নাগরিক নিহত হন। ক্রুসেড বাহিনী নির্বিচারে নারীপুরুষ ও শিশুদের হত্যা করেন। তাঁরা ক্ষেতখামার ও ফসলাদিও ধ্বংস করেন। এই হামলার মাধ্যমে এশিয়া মাইনর ও সিরিয়া-প্যালেষ্টাইনের বিভিন্ন রাজ্য খ্রিষ্টানরা দখল করে এবং কয়েকটি খ্রিষ্টান রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তী ২০০ বছরের ইতিহাস ইউরোপীয় খ্রিষ্টান বাহিনীর উপর্যুপরি হামলা ও মুসলিম প্রতিরোধের ইতিহাস।এভাবে আমরা দেখতে পাই যে, হিজরী ৬ষ্ট ও ৭ম শতকের মুসলিম সমাজে চরম সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অশান্তি বিরাজ করছিল, যা ধমীয়, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও স্থবিরতা ও অবক্ষয় নিয়ে আসে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষার অঙ্গনে স্থবিরতা আসে। মনে হয় এই সময় মুসলিম দুনিয়াকে সাংস্কৃতিক ভাবে একত্রিত করতে ইদে মিলাদুন্নবী পালন করে যাতে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হয়৷ ইরবিলের শাসক আবু সাঈদ কূকুবূরীর মাধ্যমেই এই উৎসবকে সুন্নী জগতে এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বে জনপ্রিয় উৎসবে পরিণত হয়। ৬০৪ হিজরীতে ইরবীলের শাসক আবু সাইদ মুজাফফর উদ্দীন কুকবরী আবার মিলাদুন্নবী প্রথা চালু করেন। তার এই মাহফিলে ফজর হতে জোহর পর্যন্ত সূফী নামদারী ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকত এবং এই মাহফিলে লক্ষ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা খরচ করা হত।
স্পেনের অধিবাসী আবুল খাত্তাব উমার ইবনু হাসান ইবনু দিহইয়াহ বাদশাকে মিলাদ সম্পর্কীয় “কিতাবুল তানভীল ফি মাউলিদিস সীরা-জিল মুনির” নামে একটি কিতাব লিখে ১০০০ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা লাভ করার মাধ্যমে মিলাদুন্নবী পালনে উৎসাহিত করে।প্রখ্যাত বাঙ্গালী আলেমে দীন, মাওলানা মোহাম্মদ বেশারতুল্লাহ মেদিনীপুরী উল্লেখ করেছেন যে, হিজরী ৬০৪ সাল ৫৮৩ হিজরীতে এই যুদ্ধে কুকুবুরী অতুলনীয় বীরত্ব প্রদর্শন করেন।মীলাদ অনুষ্ঠান প্রচলন করার ক্ষেত্রে আরেক ব্যক্তিত্বের অবদান আলোচনা না করলে সম্ভবত: আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি হলেন ‘‘মীলাদুন্নবী’’র উপরে সর্বপ্রথম গ্রন্থ প্রণেতা আল্লামা আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে হাসান, ইবন দেহিয়া আল-কালবী (৬৩৩হি:), যার গ্রন্থ পরবর্তীতে ‘‘মীলাদ’’ কেন্দ্রীক অসংখ্য গ্রন্থ রচনার উৎস ছিল। মীলাদের উপরে লিখিত গ্রন্থের জন্য কুকবুরী তাকে একহাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) পুরস্কার প্রদান করেন। যে গ্রন্থটি তাকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিয়েছে তা হলো ‘‘মীলাদুন্নবী’’ বা রাসূলুল্লাহরে জন্মবিষয়ে লেখা তার বই ‘‘আত- তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর আন-নাযির’’। কারণ এটিই ছিল ‘‘মীলাদুন্নবী’’ বা রাসূলুল্লাহরে জন্মবিষয়ে লেখা প্রথম বই।শতকের উল্লেখযোগ্য সীরাতুন্নবী গ্রন্থ হল মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (মৃত্যু ১৫১হি:/৭৬৮খ্রি:), আব্দুল মালেক ইবন হিশাম (মৃত্যু ২১৮হি:/৮৩৪খ্রি:), মুহাম্মাদ ইবনে সা’দ (২৩০হি:/৮৪৫খ্রি:) প্রমুখের লিখা ‘‘সীরাতুন্নবী” গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য।
শতকের উল্লেখযোগ্য সীরাতুন্নবী গ্রন্থ হল মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (মৃত্যু ১৫১হি:/৭৬৮খ্রি:), আব্দুল মালেক ইবনে হিশাম (মৃত্যু ২১৮হি:/৮৩৪খ্রি:), মুহাম্মাদ ইবনে সা’দ (২৩০হি:/৮৪৫খ্রি:) প্রমুখের লিখা ‘‘সীরাতুন্নবী” গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। ইসলামের মধ্যে মিলাদ, মিলাদুন্নবী প্রচলরকারী হল ফাতেমীয় শাসক শিয়া মুয়ীযলি দীনিল্লাহ, আর ভারত উপমহাদেশে মিলাদ প্রচলনকারী হলেন মোঘাল সম্রাট হুমায়ুন ও সম্রাট আকবরের মাতা ও অভিবাবক বৈরাম খাঁ ।
সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাষ্ট্রদূত, শেষ সম্রাট বাহদুর শাহ।গুজরাটের সুলতান দ্বিতীয় মুজফফর শাহ এবং দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ ঈদে মিলাদুন্নবী অত্যন্ত জাকজমকের সাথে উদযাপন করতেন৷ঐতিহাসিক মীরাত -ই- সিকান্দারী তে আছে ” গুজরাটের সুলতান মুজাফফর(1515- 1525) উলামা ,সৈয়দ ও বহু শেখকে ভোজে আমন্ত্রণ জানাতেন এবং সবাই পুরা বৎসরের চলার উপযোগী টাকা পয়সা ,কাপড় -চাপড় নজরানা দিতেন৷মোট কথা সম্রাটদের মাধ্যমে এই উপমহাদেশে সুন্নীদের মাঝে মিলাদুন্নবীর প্রচলন হয়। ফলে শিয়া মতাদর্শী মিলাদ ও মিলাদুন্নবীর আনুসাঙ্গিক ব্যাপারগুলো সুন্নিদের মধ্যে প্রচলিত হয়।
ভারত উপমহাদেশে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের( বাংলা প্রদেশ) মুসলমানদের কাছে এই দিন ঈদে মিলাদুন্নবী নামে পরিচিত ৷ বাঙালি মুসলমান ধর্মীয় স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে বাংলায় বসবাসের পয়লা থেকেই উৎসব – পর্বের জায়গায় নিজেদেরস্বকীয়তা ধরে রাখতে পেরেছে৷ সেই 1600 খ্রীষ্টাব্দ থেকে বাঙালি মুসলমানদের উৎসব – পর্ব উদযাপনের লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়৷ অলিখিত ভাবে সুফিরা এই উৎসব করতেন ৷(৬০৪ হিজরীতে ইরবীলের শাসক আবু সাইদ মুজাফফর উদ্দীন কুকবরী আবার মিলাদুন্নবী প্রথা চালু করেন। তার এই মাহফিলে ফজর হতে জোহর পর্যন্ত সূফী নামদারী ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকত ৷
বাংলায় সুফিবাদের আবির্ভাবকাল সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবে একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত এদেশে সুফিবাদের সর্বাধিক প্রচার ও প্রসার হয়েছে বলে জানা যায়।এর থেকে বোঝা যায় সুফি ঘরানায় এই রকম উৎসব পালন হত৷ কিন্তু লিখত ইতিহাসে কমপক্ষে 400 বছরের পুরনো ঐতিহ্য , বাহারীস্থানে গায়াবীতে ,যা মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের অধীনস্থ মীর্জা নাথান কেবল বাঙলা এবং তার আশেপাশের তৎকালীন ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন৷ দুই ঈদ ,মহরম ,শবে ররাত ,ফতেহা ইয়াজ দাহাম ,ফতেহা দোয়াজদাহাম , উদযাপনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তো বেশ পুরোনো বাংলায় ৷ বাংলার নবাবী আমলে মুর্শিদাবাদের সুলতানরাও এই দিবস কেন্দ্র করে বেশ ধুমধাম উৎসবের আয়োজন করতেন৷স্মৃতিকথায় মিলাদুন্নবী ,ঐতিহাসিক কে,পি সেন তাঁর বাংলার ইতিহাস(।নবাবী আমল) কিতাবে লিখেছেন :” নবাব সেই দিনটি একটি বিরাট উৎসব আনন্দের দিনে পরিনত করতেন৷ তিনি রবিউল আউয়াল মাসে প্রথম বারো দিন লোকদের আদর অভ্যর্থনা করতেন এবং ব্যক্তিগতভাবে আথিথেয়তায় উপস্থিত হতেন৷ বিশেষ করে তিনি গরীবদেরকে অভ্যর্থনা করতে ভালোবাসতেন ৷ এই উপলক্ষে সমস্ত মুর্শিদাবাদ শহর ভাগিরথী নদীর তীর পর্যন্ত আলোকময় সজ্জিত করে রাখতেন ৷ আলোকসজ্জার স্থানগুলোতে কুরআন শরীফের আয়াত সমূহ এবং মসজিদ ,বৃক্ষ ,লতাপাতা ও ফলসমূহ প্রদর্শিত হতো৷ সেনাপতি নাজির আহমেদ অধীনে এক লক্ষ লোক আলোকসজ্জার কাজে নিয়োজিত হতো৷ একটি নির্দিষ্ট সময়ে কামান গর্জন করত৷ বুঝতে পারছেন আজ থেকে 300 বছর আগে সার্বজনীন ভাবে মিলাদুন্নবী উদযাপন করা হতো৷উৎসবের ঢাকা গ্ৰন্থে জনাব সাদ উর রহমান তথ্য দিচ্ছেন ” 1790 সালের দিকে আরমানিটোলা তারা মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম পিরের পিতামহ আবু সাঈদ প্রতিবছর ঈদে মিলাদুন্নবী উৎসবে নিজ ব্যয়ে তবারক হিসেবে পোলাও বিতরণ করতেন”৷ঢাকার বিখ্যাত ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন জানাচ্ছেন খুবই গুরুত্ববহ ঘটনা :” গত শতকের শেষ দশকে নবাব সলিমুল্লাহ মুসলমানদের আরেকটি উৎসব হিসেবে ফাতেহা ইয়াজ দাহাম কে তুলে ধরেন৷ এ উপলক্ষে ঢাকা শহরের প্রতিটি পঞ্চায়েতকে তিনি টাকা দেন৷এই টাকা ব্যয় হতো দুটি খাতে ৷ প্রথম মহল্লা সাজানো ,দ্বিতীয় মিলাদ পড়ানো৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্ৰন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ সিদ্দিক খান – মুনতাসীর মামুন ও সাদ উর রহমানের বহুত আগেই -1966 সালে লিখেছেন ” ফাতেহা -ই- দোয়াজ দাহাম উপলক্ষে চক মসজিদের আশেপাশে চারদিক আলোকময় সাজানো হতো ৷ মসজিদে পড়ানো হতো ” মিলাদ শরীফ”৷ এই মিলাদও পড়া হতো সমবেত কন্ঠে৷ সৈয়দ মুজতবা আলীর বড় ভাই গবেষক ও ঐতিহাসিক সৈয়দ মুর্তজা আলী( 1920-1981) যখন সিলেট গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে পড়তেন তখন তাঁর স্কুলে আড়ম্বরে সঙ্গে মিলাদ উৎসব হতো৷( আমাদের কালের কথা ,পৃষ্ঠা 91)
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র জ্যেষষ্ঠতম সন্তান মাহযূযা হক 1928 সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠে জমায়েত হয়ে মিছিল আকারে শহরের সর্বত্র ঘুরতেন ৷ (ড:, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ : পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে ,পৃষ্ঠা 48)ঈদ-ই- মিলাদুন্নবী দিবস বড়ই সমারোহের সাথে সম্পন্ন হতো ,মিলাদ মহফিল ও 12 দিন ধরে ধনী ও দরিদ্রদের জেফায়েত খাওয়ানো হতো৷ ধার্মিক ও বিদ্বান ব্যক্তিদেরকে উপহার প্রদান এবং রোজা রাখা হতো(একালে আমাদের কাল : সুফিয়া কামাল ,সুফিয়া কামাল রচনা সংগ্ৰহ সংগ্ৰহ,বাংলা একাডেমি পৃষ্ঠা 557)
কুষ্টিয়া হাই স্কূলে হযরত মুহাম্মাদের জন্মোৎসব পালনের সময় প্রধান অতিথি ছিলেন অন্নদাশঙ্কর রায় ,তিন তখন কুষ্টিয়ার মুহাকুমা হাকিম ছিলেন৷( আমার এই ছোট ভুবন ,আবুল হোসেন, পৃষ্ঠা 88)। মিলাদ হতো স্কুলে ৷ সেই উপলক্ষে হযরতের জীবনের উপর রচনা প্রতিযোগিতা হতো ৷ ( আমি সরদার বলছি ,পৃষ্ঠা – 120)
কলকাতা রেডিওতে ফাতেহা দোয়াজ দহমের উপর এক জীবন্তিকা প্রচারিত হবে ৷হযরতের জন্মবৃত্তান্ত ,কোরেশের অত্যাচার ,ওহোদের রযুদ্ধ ইত্যাদি নানা ঘটনা শুধু কথা ,বক্তৃতা এবং গানের মাধ্যমে রূপায়িত করা হবে ৷ স্ক্রপট ওপর মাওলানা আকরম খাঁ তাঁর সই করার পর এইধরনের জীবন্তিকা দেখে মহাখুশি ছিলেন নৃপেন মজুমদার ৷ মুসলমাদের পর্বের জন্য লেখা হয় বিশেষ বিশেষ প্রোগ্রাম হতো৷( আমার শিল্পী জীবন কথা,- প্রথম গান রেকর্ড করা প্রথম বাঙালি মুসলিম- আব্বাসউদ্দীন আহমেদ৷- ,71 পৃষ্ঠা ,,)
কলকাতা অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ইসলামী ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পিরিবেশনার জন্য কাশগরীকে আমরা বহুবার পেয়েছি ৷ একবার ফাতেহা দোয়াজদাহাম ,উপলক্ষে সম্পূর্ণ আরবীতে 30 মিনিটের একটি অনুষ্ঠান তিনি করেছিলেন যার সুর ঝংকার অন্য ভাষাভাষী লোকদের কাছে অনবদ্য মনে হয়েছিল৷1945 সালে তিনি ইন্ডিয়া রেডিও’র কলকাতার কেন্দ্রের সাহিত্য – বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রযোজনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ উদ্ধৃত স্মৃতিচারণ তৎকালের৷( জীবনের শিলান্যাস : সৈয়দ আলী আহসান ,পৃষ্ঠা 141)
সামাজিক সংস্কৃতির একটা রূপ উঠে আসে সাহিত্যে , কারন সমাজকে আঁকড়ে ধরেই মূলত সাহিত্যের টিকে থাকা ,বেড়ে ওঠা৷ আর সাহিত্যের প্রবীনতম শাখা কবিতা ৷ 1947 সালের পূর্বে রচিত তৎকালীন বাঙালি সমাজে কবি ও প্রাবন্ধিক নবী দিবস নিয়ে বিভিন্ন কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন তার মধ্যে চিন্তাবিদ ,প্রাবন্ধিক এস . ওয়াজেদ আলি লিখেছেন তার কিছু অংশ উদ্ধৃতি হিসেবে তুলে ধরছি ” সেদিন ( 12 রবিউল আউয়াল) আমি এক নবী দিবসের উৎসবে সভাপতিত্ব করতে গিয়েছিলাম৷ হিন্দু ,মুসলিম উভয় ধর্মের লোকই এসেছিলেন উৎসবে যোগ দিতে আর বক্তৃতা শুনতে ৷ হজরত মোহাম্মদের জন্মতিথির অনুষ্ঠান৷ সুতরাং ধর্ম জাতি নির্বিশেষে সকলেই তাতে অংশ নিয়ে বিশ্ববরেণ্য মহাপুরুষের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চেয়েছিলেন৷”
অধ্যাপক আলী আহমদ লিখেছেন”কোন জাতিকে প্রকৃষ্টরূপে জানিতে হইলে সেই জাতির গ্ৰন্থরাজিই সুন্দর উপাদান ৷গ্ৰন্থপঞ্জী হইল জাতির দরপন – স্বরুপ ৷1850 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত স্বতন্ত্রভাবে মিলাদ নিয়ে রচিত কিছু ঐতিহাসিক 20টি কিতাব সংগ্রহ আছে ,তারমধ্যে কিছু তুলে ধরলাম:-(গুলিস্তাঁ,1988)
মৌলুদ শরীফ (মীর মশাররফ আহমদ -1898), মৌলুদ শরীফ ( মৌলভী মুহম্মদ নইমুদ্দীন -1895),মৌলুদ শরীফ (নওয়াব বাহাদুর নওয়াব আলী চৌধুরী -1905),বাংলা মউলুদ শরীফ ( সৈয়দ আবুল হোসেন -1925) ইত্যাদি|1937সালে অক্টোবরে ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ” এক জাতি গঠন” প্রবন্ধে ” একজাতি হইতে গেলে জাতির সাধারণ পর্বদিন চাই”উল্লেখ করে মুসলমানদের তরফ থেকে মিলাদুন্নবীর উদযাপনকে ” জাতীয় উৎসব ” হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন৷
তথ্য সূত্র:
১।.ড: ইবরাহীম আনীস ও সঙ্গীগণ, আল-মুজাম আল ওয়াসীত (বৈরুত, দারুল ফিকর) ২/১০৫৬।
২।.ইবনে মনজুর, লিসানুল আরব (বৈরুত, দারু সাদের) ৩/৪৬৮।
৩।.আব্দুল হাই লাখনাবী, যাফরুল আমানী ফী মুখতাসারিল জুরজানী (সংযুক্ত আরব আমিরাত, দুবাই, দারুল ইলম, ১ম সংস্করণ, ১৯৯৫) ৩১-৩৪ পৃ।
৪।সহীহ মুসলিম (মিশর, কাইরো, দারু এহইয়াইল কুতুবিল আরাবিয়্যাহ, তারিখবিহীন) ২/৮১৯।
৫।.ইবনে হাজার, লিসানুল মিযান ৪/২৯৬।
৬।.ইবনে কাসীর , আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৯/২৬।
৭।.ইবনে খাল্লিকান, প্রাগুক্ত ১/২১২, ৩/৪৪৯-৪৫০।
৮।.ইবনে খাল্লিকান, প্রাগুক্ত ১/২১১-২১২, ৩/৪৫০।
৯।.ইবনে খাল্লিকান, প্রাগুক্ত ১/২১২, ৩/২৯, ৪/১১৯।
১০।.ফুয়াদ সিযকিন, তারিখুল তুরাস আল আরাবী (সৌদি আরব, রিয়াদ, আল-ইমাম বিশ্ববিদ্যালয় ১ম সংস্করণ ১৯৮৩), প্রথম খন্ড, ২য় অংশ, ৬৫-৮৬ পৃ।
১১।.আশ-শাতেবী, আবু ইসহাক ইবরাহীম, আল-ই’তিসাম (সৈাদী আরব, আল-খুবার, দারু ইবনে আফফান, ৪র্থ সংস্করণ ১৯৯৫) ২/৫৪৮, আস সালেহী, আস-সীরাতুশ শামিয়্যা, প্রাগুক্ত ১/৩৬২-৩৭৪।
১২।.বাঙালি মুসলমানের সাংস্কৃতিক পাটাতনে মিলাদুন্নবী—-/মুহাম্মাদ আবু সাঈদ ১৩।.মৌলুদ শরীফ —মীর মশাররফ হোসেন(১৮৯৪)
১৪।.বাংলা মউলুদ শরীফ (হজরত রসুলুল্লাহ জন্মবৃত্তান্ত)—সৈয়দ আবুল হোসেন(১৯২৫)
১৫।.মিলাদে হাবিব( হজরত মুহাম্মদ (দ:) এর জম্ম বৃত্তান্ত)— মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস(১৯২৭)
১৬।.মিলাদুন্নবী(হজরত রসুলুল্লাহ জন্মবৃত্তান্ত)—মতিয়র রহমান (১৯৪১)১৭। আমার শিল্পী জীবন কথা–আব্বাসউদ্দিন আহমদ (১৯৯
১৭। আমার শিল্পী জীবন কথা —আব্বাসউদ্দিন আহমদ (১৯৯১)
১৮।.একালে আমাদের কাল — সুফিয়া কামাল (সুফিয়া কামাল রচনা সংগ্রহ)—(২০১৬)
১৯।.ড: মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবন—-মাহযযা হক(১৯৯১)২০।.আত্মজীবনী জীবন ক্রমশ ঠিকানা পশ্চিম এখন বর্তমান — আবু রুশদ(১৯৯৮)
২০।.আত্মজীবনী জীবন ক্রমশ ঠিকানা পশ্চিম এখন বর্তমান — আবু রুশদ(১৯৯৮)