কিন্তু অপারেশন সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই রোগী মারা যায়। স্বামীর মতো একদিন রহিমা বিবিও। মা-বাপের মতো একদিন লাল্টুও। তবে লাল্টুর চলে যাওয়াটা মা-বাপের মতো মুখ দিয়ে রক্ত তুলতে তুলতে নয়। অন্য রকম ভাবে। প্রথমে সে জায়গাটা খুঁড়তে শুরু করে। জিনিস গুলো তখন নীচের দিকে নামতে শুরু করে। যত খুঁড়ে তত নামে। যত খুঁড়ে তত নামে। তবু লাল্টু খোঁড়া বন্ধ করে না। সে বলে—পাতালে গ্যালেও পাতাল থিক্যা তুলে আনবো। কতো নীচে নামতে পারিস নাম না! তারপর আমি দেকছি। লাল্টুর জেদ ধরে যায়। জেদের বশে সে হুক হুক করে খুঁড়ে যায়। খুঁড়তে খুঁড়তে মাথার ওপর খোঁড়া হলে দুই দিকের মাটি এসে ঢেকে যায়। মন্টু এসব দেখে সাহস করে আর ও ঘরে কোনো দিন ঢোকেনি। ঘরটা এখন তালাবন্ধ।
Latest News
-
-
ভাড়াটিয়া পরাধীন যাপন ভাল্লাগে না
আমি বাড়ি যাবো, আমার মাটিতে,
যারা দৌড়ে জিতবে তারা থাকুক।
কৃত্রিম এ জীবন ছেড়ে একদিন আমি,
আমার ছোট্ট আটপৌরে মাটির ঘরে
চিরদিনের জন্য চলে যাবো! -
মদই হোক বা মিছরি, প্রবাদ-প্রবচন হোক বা ভোজন, বাঙালি গ্রাম্যজীবনে তাল-সংস্কৃতির ছাপ খুব গভীর। তালগাছ বাঙালির ফ্যানগাছ। তালপাখার ঠান্ডা বাতাস যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে ফ্যানের আরাম দিয়েছে। প্লাস্টিকের সর্বগ্রাসী ব্যবহার আসার আগে তালপাতার চাটাই, মাদুর, বসার আসন, তালপাখা গ্রামবাংলার মাটির সংসারের স্থায়ী সদস্য ছিল। তালপাতার পুতুল, চরকা ছিল বাংলার শিশুর খেলার সাথী। একসময় শিশুর হাতের-লেখার খাতা ছিল তালপাতা। বহু প্রাচীন তালপাতার পুঁথিও আবিষ্কৃত হয়েছে। তালগাছের কাণ্ড দিয়ে তৈরি ডিঙি, নৌকায় ভাটিয়ালি গানের ঢেউ উঠত বাংলার নদীতে। সিমেন্ট আবিষ্কারের অনেক আগেই তালগাছের লম্বা আর শক্ত কাণ্ড ধনীদের কড়িবরগার দালানকোঠা উপহার দিয়েছিল। আর দরিদ্রের কুটিরে দিয়েছিল তালপাতার ছাউনি।
-
গভীর অরণ্যের আলোছায়ায়, স্বপ্নীল উপত্যকায়,
সমুদ্রের ফেনিল উর্মিমালায় ভেসে জানলাম
জোর করতে নেই, প্রভাবিত করতে নেই কাউকে
প্রবলভাবে না চাইলে কিছুই প্রকাশ করতে নেই
বাক্যালাপে, সম্পর্কে এমনকি ভালোবাসায় । -
বিরাট পাকুড় গাছের তলে বাঁশের মাচা। খালি গায়ে গ্রামের মানুষ, মুনিশ এই মাচায় সুযোগ পেলেই একটু জিরিয়ে নেয়।নগ্ন শরীরের ঘন ঘন আলিঙ্গনে মাচার গা একেবারে তেল তেলে। মাছি বসলে পিছলে পড়ার উপক্রম।বেলা বেশি হয় নি। পাকুড়গাছতলা পাড়ার মরূদ্যান। ক্লান্ত কৃষক এর তলে বসে তার ক্লান্তি ভোলে।
-
যাঁরা সি পি আই (এম) কে সংশোধনবাদী বলে গণ্য করেন ও নিজেদের মার্কসবাদী, লেনিনবাদী বা মাওবাদী বলে দাবি করেন তাঁদেরও বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনদিন কোন কথা বলেননি।
-
নাদিরার একাকিত্ব, স্বামী হাসিমের তার প্রতি অবহেলা তাকে বেপরোয়া করে তোলে। সে সিরাজকে কাছে পেতে চায়। সিরাজকে তার সমস্যার কথা বলে। অনেকটা এগিয়েও আসে তারা। কিন্তু ঘটনাক্রমে চরম মুহূর্তে সিরাজের আত্মোপলব্ধি হয়। তার পিতৃ-মাতৃ অতীত ইতিহাস মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় বশিরউদ্দিন চাচাকে। সেই একই অন্যায় সেও কি করে ফেলবে! সিরাজ ফিরে যায় বৈধ সম্পর্কের বৃত্তে। নাদিরার থেকে ধীরে ধীরে সে দূরে সরে যায়।
-
কেন এত দূরে, কাদের সিদ্ধান্তে এবং ফয়সালায় আজ জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত। ক্লারিয়েটে বাজে অন্তহীন এক বেদনার সুর। তবে নিজ ভূমি থেকে নির্বাসিত অন্যরা এ অঞ্চলে বেশ আছে বলে জানায়। কেননা, দণ্ডকারণ্যের মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে সফল প্রকল্প। যেখানে মানুষ—প্রকৃতির বদান্যতায় একটু স্বস্তিতে ছিল। প্রজন্ম পরম্পরায় যাপিত জীবনে দুঃখের দহন কিছুটা প্রশমিত হলেও স্মৃতির দহন কী আমৃত্যু ফুরোয়? ভারতের বিভক্তিকরণ শুধু একটি সাংবিধানিক দেশবিভক্তিতেই নিষ্পত্তি হয়নি, বরং বহু ক্ষেত্রেই তা ছিল অসংখ্য ঘরগেরস্তালি, পরিবার ও মানুষের জীবনের মর্মান্তিক ব্যবচ্ছেদ। ইতিহাসবিদ জ্ঞান পাণ্ডের মন্তব্য, “ভারতীয় ইতিহাসচর্চায় দেশ বিভক্তির অবস্থান স্ববিরোধী।”
-
কিছুক্ষনের মধ্যে জীবন বিশ্বাস অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার শেষ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। বাবার শেষ পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে ছেলে বলে, ‘বাবা এখন বৃদ্ধ হয়েছেন, তার বাঁচার জন্য একটা শান্ত পরিবেশ দরকার। আমার ছেলে বাড়ীতে সবসময় খেলাধূলা, চিৎকার ইত্যাদি করে, তাই বাবার পক্ষে ভাড়া বাড়িই শ্রেয়। কাজের লোক দেখাশোনা করবে, অসুবিধা তো কিছু নেই।’
-
হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদ নিয়ে বর্তমান ভারত কোন দিকে, স্বৈরাচারী শাসকের ইসলাম ধ্বংসের প্রক্রিয়া কী রকম ইত্যাদি বিষয়ের সঙ্গে ভারতের অর্থনীতি, সংবিধান, মানবনীতি কতখানি সংকটে তারই অনুসন্ধানে পূর্বাঞ্চল থেকে রাকেশ রৌশানের সম্পাদনায় কুড়িটি প্রবন্ধ এবং দুটি সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদ ও ভারতবর্ষ (সেপ্টেম্বর ২০২৩)। লেখক তালিকায় আছেন এই মুহূর্তের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লেখক, চিন্তাবিদ, অধ্যাপক, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এঁদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করতেই হয়: অমর্ত্য সেন, অরুন্ধতী রায়, রাম পুনিয়ানি, বদরুদ্দীন উমর, রামচন্দ্র গুহ, প্রভাত পট্টনায়ক, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, আশিস গুপ্ত, অশোক মুখোপাধ্যায়, মৃন্ময় সরকার, অশোক চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য দাশ, কোয়েল সাহা, পার্থপ্রতিম রায়, সুমনকল্যাণ মৌলিক প্রমুখ।